
নিজস্ব প্রতিবেদক
হাদী ও নূরের ওপর হামলা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, এটি আদর্শের রাজনীতির বিরুদ্ধে দীর্ঘদিনের জমে থাকা ঘৃণারই প্রকাশ। যারা ন্যায্যতার কথা বলে, যারা আদর্শের রাজনীতি চায়—আজ তাদের জন্য এই দেশ কি নিরাপদ? প্রশ্নটা এখন আর কেবল ব্যক্তি হাদী বা নূরের নয়, প্রশ্নটা ন্যায় ও অন্যায়ের লড়াই নিয়ে।
তারা বলে ন্যায্যতা চায়, তারা বলে আদর্শের রাজনীতি চায়—এই চাওয়াটাই কি তাদের অপরাধ? যদি তাই হয়, তাহলে স্পষ্ট করে বলা দরকার—তাদের শত্রুরা কারা। বাস্তবতা বলছে, তাদের শত্রু তারাই, যারা দুর্নীতিকে রাজনীতির নিয়ম বানিয়েছে, যারা ভয় পায় স্বচ্ছতার আলোতে নিজেদের মুখ দেখাতে।
হাদী ও নূর কোনো অস্ত্র নিয়ে রাজপথে নামেননি, তারা লুটপাটের রাজনীতি করেননি, তারা ক্ষমতার ভাগ চায়নি—তারা চেয়েছে প্রশ্ন করতে, অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলতে। আর এই প্রশ্ন করাটাই আজ সবচেয়ে বড় অপরাধ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
যখন যুক্তি শেষ হয়ে যায়, তখন লাঠি নামে। যখন আদর্শকে মোকাবিলা করার সাহস থাকে না, তখন হামলা আসে। হাদী ও নূরের ওপর হামলা প্রমাণ করে—এই দেশে এখনও এমন শক্তি সক্রিয়, যারা ভিন্নমত সহ্য করতে শেখেনি, যারা গণতন্ত্রের কথা বলে কিন্তু গণতান্ত্রিক আচরণে বিশ্বাস করে না।
সবচেয়ে উদ্বেগজনক বিষয় হলো—এই হামলাগুলোকে কেউ কেউ নীরবে সমর্থন দিচ্ছে, কেউ কেউ আবার দায় এড়িয়ে যাচ্ছে। অথচ প্রশ্নটা সহজ—ন্যায্যতার রাজনীতি করলে যদি হামলার শিকার হতে হয়, তাহলে তরুণ সমাজকে আমরা কোন বার্তাটা দিচ্ছি? আমরা কি বলছি, চুপ থাকো—নইলে মার খাও?
আজ হাদী ও নূরের ওপর হামলা হয়েছে, কাল অন্য কেউ হবে। কারণ সমস্যাটা ব্যক্তি নয়, সমস্যাটা আদর্শ। যারা দুর্নীতির বিরুদ্ধে দাঁড়ায়, যারা রাজনীতিকে সেবায় ফিরিয়ে আনতে চায়—তাদের দমন করাই যেন এক শ্রেণির রাজনীতির মূল কৌশল।
কিন্তু ইতিহাস সাক্ষী—হামলা দিয়ে আদর্শকে দমানো যায় না। লাঠি দিয়ে প্রশ্ন থামানো যায় না। বরং প্রতিটি আঘাত আদর্শকে আরও শক্ত করে, আরও স্পষ্ট করে তোলে।
হাদী ও নূরের ওপর হামলার সুষ্ঠু তদন্ত চাই, দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। তার চেয়েও বেশি চাই—এই দেশে এমন একটি রাজনৈতিক পরিবেশ, যেখানে ন্যায্যতার কথা বললে নিরাপত্তা চাইতে না হয়।
কারণ আদর্শের রাজনীতি কোনো অপরাধ নয়। অপরাধ হলো—আদর্শকে ভয় পাওয়া, ন্যায্যতাকে শত্রু বানানো, আর দুর্নীতিকে রক্ষার জন্য মানুষকে আঘাত করা।
আজ যদি আমরা চুপ থাকি, আগামীকাল ন্যায় নিজেই আমাদের প্রশ্ন করবে—তোমরা তখন কোথায় ছিলে?
আল আমিন মিলু
রাজনৈতিক বিশ্লেষক
আহ্বায়ক গনঅধিকার পরিষদ
সরিষাবাড়ি উপজেলা শাখা