
প্রদীপ চন্দ্র মম
বাতাসে ভেসে আসে ধানের গন্ধ—
যেন শৈশবের কণ্ঠে নদীর সুর।
দূর মাঠে কৃষকের হাসি ঝরে পড়ে রোদের মতো,
বৃষ্টির নরম ছোঁয়ায় জেগে ওঠে মাটির গভীর প্রাণ।
এ দেশের আকাশ নীল, আবার বিষণ্ণও কখনো—
মেঘেরা কাঁদে, সূর্য হাসে;
মাঠের সবুজ বুক জুড়ে সোনালী ফসলের ঢেউ,
যেন সময়ের হাত বুলিয়ে দেয় বাংলার কপালে নীরব আশীর্বাদ।
নদী এখানে মায়ের মতো—
চিরন্তন, অদম্য, অন্তরঙ্গ;
তার ঢেউয়ের ভাঁজে মিশে থাকে প্রার্থনার সুর,
আর তীরের কাশবনে দোলে শরতের নিস্তব্ধ শান্তি।
শীত নামে ধীরে, কুয়াশার চাদর গায়ে—
মানুষ জ্বালে আগুন, বলে গল্প;
তাদের চোখে মাটির গন্ধে ভরা এক অনন্ত নির্ভরতা,
যা সময়ও ভাঙতে পারে না কোনোদিন।
খরার দিনেও মাটি কাঁদে—
তবু কৃষকের চোখে থাকে ভোরের প্রতিশ্রুতি;
বৃষ্টি নামলে সে জানে—
জীবন আবার ফিরবে দো-ফাঁটা মাটির ভেতর দিয়ে।
বাংলার মানুষ আর প্রকৃতি—
দু’জনেই একে অপরের আয়না;
যেখানে আত্মা আর রক্তের বন্ধন মিশে আছে
শালুক, শাপলা, ধান আর নদীর অনন্ত প্রবাহে।
আমি দেখি—
এই ভূমি কেবল ভূমি নয়, এক স্পন্দমান কবিতা;
যেখানে জীবনানন্দের নিঃশব্দ পদধ্বনি
রাত্রি ভরে রাখে শিউলির সুবাসে।
২৯/১০/২০২৫ খ্রিঃ।