
নিজস্ব প্রতিবেদক
দেশে এখন এমন এক বাস্তবতা তৈরি হয়েছে যেখানে নিয়মনীতি শব্দটা মানুষ শুনলে হাসে, বিশ্বাস করে না। অথচ নিয়মই সভ্যতার মূলভিত্তি, ন্যায়ের প্রতীক। কিন্তু এই নিয়ম যখন একপাক্ষিক হয়ে যায়, তখন জনগণের মনে ভর করে হতাশা, ক্ষোভ আর অবিশ্বাস।
আজ মানুষ নিয়ম মানতে চায় না — কারণ তারা দেখে, নিয়ম কেবল দুর্বলদের জন্য। শক্তিশালীরা নিয়মের বাইরে দাঁড়িয়ে হাসে, আর সাধারণ মানুষ নিয়মের বেড়াজালে পিষ্ট হয়। অফিস থেকে আদালত পর্যন্ত, সরকারি প্রকল্প থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান — প্রতিটি জায়গায় যেন অনিয়মই নিয়মে পরিণত হয়েছে।
একজন সাধারণ নাগরিক যখন ঘুষ না দিলে ফাইল নড়ে না, যখন পরীক্ষায় মেধা নয়, সুপারিশ কাজ করে; যখন বিচারক নয়, ফোনকল নির্ধারণ করে রায় — তখন মানুষ নিয়মের উপর থেকে বিশ্বাস হারায়। তারা ভাবে, “নিয়ম মানলে ক্ষতি, অনিয়মে লাভ।” এই চিন্তাটাই ধীরে ধীরে সমাজের মেরুদণ্ড ভেঙে দিচ্ছে।
অনিয়ম ও দুর্নীতির এই চক্র শুধু প্রশাসনে নয়, রাজনীতিতেও গভীরভাবে গেঁথে গেছে। যে রাজনীতি জনগণের কল্যাণের কথা বলার কথা, সেখানে অনেকে রাজনীতিকে ব্যবসা বানিয়েছে। দুর্নীতি যেন এখন দক্ষতার প্রতীক, আর সততা হয়ে গেছে বোকামি।
কিন্তু সমাজ টিকে থাকতে হলে বিশ্বাস ফিরিয়ে আনতে হবে। মানুষকে আবার নিয়মের প্রতি আস্থা দিতে হবে। এজন্য দরকার উদাহরণ — এমন নেতার, এমন কর্মকর্তার, এমন নাগরিকের যারা দেখাবে, সৎ থাকা এখনও সম্ভব, ন্যায়ের পথেই জয় মেলে।
নিয়মনীতি তখনই অর্থবহ হবে, যখন তা সবার জন্য সমানভাবে প্রযোজ্য হবে। অন্যথায়, অনিয়ম-দূর্নীতির এই অন্ধকারে দেশ হারাবে তার ভবিষ্যৎ প্রজন্মের নৈতিকতা, হারাবে আস্থা।
আজ প্রশ্ন একটাই— আমরা কি এই অন্ধকার থেকে বেরিয়ে নিয়মের আলোর পথে ফিরতে পারব? না কি অনিয়মের ঘূর্ণিতে ডুবে গিয়ে “নিয়ম” শব্দটাকেই ইতিহাসে পরিণত করব?
-আল আমিন মিলু
আহ্বায়ক
গনঅধিকার পরিষদ
সরিষাবাড়ি উপজেলা শাখা
জামালপুর