প্রদীপ চন্দ্র মম
রাস্তায় দাঁড়িয়ে সে—
বৃষ্টি ঝরছে টুপটাপ,
কাঁধে ভিজে যায় ইউনিফর্ম,
তবু চোখে টহলের আলো জ্বলে নিত্যরাত।
কেউ তাকায় না তার দিকে—
যে শহরটাকে রাখে জেগে নিরাপদ,
সেই শহরই তাকে ডাকে কেবল
“অভিযুক্ত” নামে অবিরত।
ঢাকার মোড়ে, বন্দরের কোণে,
রাজশাহীর পথে, সিলেটের বাতাসে—
যে মুখগুলো মুখোশ পরে মিশে যায় ভিড়ে,
তাদের ছায়া তাড়া করে সে দিনরাতের মেলায়।
কিন্তু ছায়ার মতোই অদৃশ্য তার শ্রম,
তার ক্লান্তি হারায় জনতার কোলাহলে—
শিশুটি কাঁদে ঘরের ভেতর,
বাবা ফেরেনি ঈদের রাতে—
কারণ রাস্তায় ছিল মিছিল,
দায়িত্ব জ্বলেছে বুকের ভেতর আগুন হয়ে।
মায়ের ফোনে বারবার কাঁপে নীরবতা…
“বাবা, তুমি কবে ফিরবে?”
উত্তরে আসে শুধু সাইরেনের হাহাকার,
রাতভর নিদ্রাহীন প্রহর।
পুলিশও মানুষ—
তারও ক্ষত আছে, তারও ভয়,
যে আহত হয় দায়িত্বে,
তার খবর ছাপা হয় না প্রথম পাতায়—
কারণ, সেই খবর বিক্রি হয় না সময়ের বাজারে।
রাজনীতি ঘিরে ধরে তার ইউনিফর্ম,
ক্ষমতার দাবায় সে শুধু ঘুটি;
কখনও অন্যায়ের শিকার,
তবু অন্যায়ের দায় তার কাঁধে গুটি গুটি।
তবু সকালে আবার সে বের হয়—
রাস্তা পাহারা দিতে,
মানুষের মুখে শান্তির ছায়া রাখতে।
চায় না সে প্রশংসা,
চায় শুধু—
একটু বোঝাপড়া,
একটু শ্রদ্ধা,
একটু মানবিক দৃষ্টি।
যে সমাজ বোঝে না প্রহরীর ক্লান্তি,
তার শান্তি কেবল মুখোশান্তি।
তবু পুলিশ দাঁড়িয়ে থাকে নীরবে—
অভিযোগের ভারে নত, তবু অবিচল প্রহরী সে রবে।
১৯/১০/২০২৫ খ্রিঃ।