রিমন চৌধুরী,নীলফামারী প্রতিনিধি:
নীলফামারীর ডোমার উপজেলা একসময়কার প্রসিদ্ধ স্থলবন্দর হলেও যাত্রীসেবার জন্য এখনও গড়ে ওঠেনি স্থায়ী বাস টার্মিনাল। প্রায় তিন দশক আগে সরকারি খাস জমি বরাদ্দ থাকা সত্ত্বেও রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব ও প্রভাবশালী মহলের স্বার্থের কারণে থেমে আছে এই প্রকল্প। এতে প্রতিদিন ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন যাত্রী, পরিবহন শ্রমিক ও মালিকরা।
ডোমারকে ৩০ বছর আগে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে পৌরসভায় উন্নীত করা হলেও এখনো যাত্রীসেবা উন্নয়নে স্থায়ী অবকাঠামো গড়ে ওঠেনি। বর্ষা মৌসুমে অস্থায়ী টার্মিনাল খানা-খন্দ, কাদা ও জলাবদ্ধতায় পরিণত হয়। বাধ্য হয়ে যাত্রীদের সড়কের ধারে বা কর্দমাক্ত স্থানে বাসে উঠানামা করতে হয়, যা ভোগান্তির পাশাপাশি দুর্ঘটনার ঝুঁকিও বাড়াচ্ছে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, তিন দশক আগে ডোমার বাস টার্মিনালের জন্য সরকারি ৪টি দাগে ১.১৩ একর জমি বরাদ্দ দেওয়া হয়। পরে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) যাত্রীসুবিধার্থে একটি পাকা ভবনও নির্মাণ করে। তবে রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের কারণে সেটি কার্যকর হয়নি। অব্যবহৃত ও অবহেলায় পড়ে থাকা ভবনটি বর্তমানে ধ্বংসের মুখে।
এদিকে বরাদ্দকৃত জায়গা প্রভাবশালীদের দখলে থাকায় পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের অস্থায়ীভাবে ভাড়া জায়গায় টার্মিনাল চালাতে হচ্ছে। এতে পৌর এলাকা ও প্রধান সড়কে তীব্র যানজট সৃষ্টি হচ্ছে এবং যাত্রীরা পড়ছেন চরম দুর্ভোগে।
ডোমার উপজেলা শ্রমিক ইউনিয়নের এক নেতা বলেন,
“আমাদের দীর্ঘদিনের দাবি—একটি স্থায়ী বাস টার্মিনাল নির্মাণ। জায়গা থাকলেও রাজনৈতিক কোন্দলের কারণে কাজ হচ্ছে না। এতে শ্রমিক ও যাত্রী উভয়েই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।”
একজন ক্ষুব্ধ যাত্রী বলেন,প্রতিদিন কাদা-মাটিতে ভিজে বাসে উঠতে হয়। বৃষ্টির দিনে তো অবস্থা আরও ভয়াবহ হয়ে ওঠে। অথচ সরকারি জমি বরাদ্দ থাকলেও কেন টার্মিনাল হয়নি, তা আমাদের বুঝে আসে না।”
ডোমার পৌর প্রশাসক শায়লা সাঈদ তন্বী জানান,
“আইন-শৃঙ্খলা কমিটির মিটিংয়ে বিষয়টি আলোচনায় এসেছে। বাস টার্মিনালের জন্য জমি বরাদ্দ রয়েছে। শিগগিরই সংশ্লিষ্টদের নিয়ে আলোচনা হবে, যাতে পরিবহন মালিকেরা নির্ধারিত স্থানে যেতে সম্মত হন।”
সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, ডোমারে একটি স্থায়ী বাস টার্মিনাল নির্মাণ হলে যানজট কমবে, যাত্রীদের জন্য তৈরি হবে নিরাপদ ও আরামদায়ক পরিবেশ এবং পরিবহন শ্রমিকরা সুষ্ঠুভাবে দায়িত্ব পালনের সুযোগ পাবে।