নিজস্ব প্রতিবেদক
বাংলার রাজনীতির এক অদ্ভুত বাস্তবতা হলো—যতো উপরে উঠুক না কেনো “কাক”, সে কখনো “ময়না” হতে পারে না। কারণ, ময়না আকাশে ডানা মেলে আলো খোঁজে, কিন্তু “কাক” সারাজীবন ময়লায় ঠোঁট ডুবিয়েই সুখ পায়। এই রূপক শুধু পাখির জগতে নয়, রাজনীতির মাঠেও ভয়াবহভাবে সত্য হয়ে দাঁড়িয়েছে।
আজকের বাংলাদেশে আমরা দেখি, নেতৃত্বের নামে কত মানুষ উঠে আসছে, পদ-পদবী পাচ্ছে, চেয়ার গরম করছে; কিন্তু আদর্শের প্রশ্নে তারা নিঃস্ব। জনগণের ভালোবাসা অর্জনের বদলে তারা সুযোগ খোঁজে ভাগবাটোয়ারার রাজনীতিতে, যেখানে মূল লক্ষ্য থাকে—কে কত শতাংশ কমিশন খাবে, কে কতটুকু সুবিধা ভোগ করবে।
আদর্শহীন রাজনীতি আসলে মরা নদীর মতো। বাইরে হয়তো পানি দেখা যায়, কিন্তু ভেতরে স্রোত নেই। জনগণকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি, ত্যাগের ইতিহাস, সংগ্রামের চেতনা সব হারিয়ে যায় স্বার্থপরতার ঘূর্ণিপাকে। তাই জনগণের রক্ত-ঘামে অর্জিত আন্দোলন শেষে যখন আমরা দেখি কেবল কাকা-ভাইপোর ভাগাভাগি, তখন বোঝা যায় কেনো এই মাটিতে সত্যিকারের গণতন্ত্র এখনো শেকড় গজাতে পারেনি।
একজন ময়না যেমন গান শোনায়, সৌন্দর্য ছড়ায়, মানুষকে আনন্দ দেয়; তেমনি একজন সত্যিকারের নেতা জনগণের সেবা করে, উন্নয়ন আনে, ভালোবাসা অর্জন করে। কিন্তু যারা ময়লার কাক, তাদের কাছে জনগণের স্বপ্নের কোনো দাম নেই। তাদের কাছে সবই শতাংশের হিসাব—চেয়ার মানে কমিশন, আন্দোলন মানে ভাগাভাগি, আর রাজনীতি মানে ব্যক্তিগত স্বার্থসিদ্ধির সিঁড়ি।
আজ তাই প্রয়োজন নতুন এক রাজনৈতিক সংস্কৃতি। যেখানে নেতৃত্ব মানে হবে ত্যাগ, সেবা আর নৈতিক দৃঢ়তা। যেখানে রাজনীতি হবে জনগণের জন্য, কাকের জন্য নয়। ময়লার ঠোঁট ভেজানো কাকদের সরিয়ে দিতে হবে, জায়গা দিতে হবে ময়নার মতো নির্মল, আদর্শবান নেতৃত্বকে।
না হলে, ইতিহাস বারবার আমাদের সামনে একই চিত্রই মেলে ধরবে—
“কাক যতো উপরে উঠুক, সে ময়না হবে না,
আর আদর্শহীন নেতারা শুধু শতাংশই খাবে।”
—আল আমিন মিলু
আহ্বায়ক
গনঅধিকার পরিষদ
সরিষাবাড়ি উপজেলা শাখা
জামালপুর