নিজস্ব প্রতিবেদক
আজকের রাজনীতিতে এক অদ্ভুত বৈপরীত্য আমাদের সামনে ঘনিয়ে এসেছে। মুখে রাষ্ট্র সংস্কারের বুলি, গণতন্ত্রের গান, জনতার ক্ষমতায়নের প্রতিশ্রুতি—কিন্তু অন্তরে লুকিয়ে রয়েছে ফ্যাসিবাদী মনোভাব, প্রতিহিংসা, ক্ষমতা কুক্ষিগত রাখার অপচেষ্টা। এটি যেন আমাদের সময়ের রাজনীতিবিদদের ‘নতুন স্বভাব’ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
রাজনীতির এই মুখোশধারীরা চিৎকার করে বলেন, তারা পরিবর্তন চান, তারা দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গড়বেন, বাকস্বাধীনতা নিশ্চিত করবেন—কিন্তু বাস্তবে দেখা যায়, সমালোচনার মুখোমুখি হলে তারাই সবচেয়ে ভয়ংকর প্রতিক্রিয়া দেখান। বিরোধীদের দমন, মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় বাধা, আন্দোলনের নামে দমনপীড়ন—সবই সেই ফ্যাসিবাদী মানসিকতার বহিঃপ্রকাশ।
সংস্কার শব্দটি আজকাল রাজনৈতিক প্রচারণার অলঙ্কার মাত্র। এটি ভোটের সময়ে ব্যবহৃত এক মোহজাল, যা জনগণের হৃদয় ছুঁয়ে গেলেও বাস্তবতায় রূপ নেয়না। এর পেছনে থাকে গদি রক্ষার অসৎ অভিপ্রায়, আর সেই অভিপ্রায় বাস্তবায়নে প্রয়োগ হয় রাষ্ট্রযন্ত্রের দমনমূলক শক্তি।
ফ্যাসিবাদ মুখে আসে না, আচরণে ধরা পড়ে। যারা নিজেদের গণতন্ত্রের রক্ষক বলে দাবি করেন, তারাই আজ বিরুদ্ধ মতকে শত্রু মনে করেন। দলীয় বিরোধীদের দেশদ্রোহী তকমা দেন। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে শুরু করে সামাজিক মাধ্যম—যেখানে কথা বলার সুযোগ থাকে, সেখানেই বসে থাকে এক অদৃশ্য সেন্সরের ছায়া।
আমরা যদি সত্যিকারের রাষ্ট্র সংস্কার চাই, তাহলে প্রথমেই প্রয়োজন রাজনৈতিক নেতা ও কর্মীদের অন্তর সংস্কার। যাদের অন্তরে লুকিয়ে আছে প্রতিহিংসা, অন্যের কণ্ঠরোধের বাসনা—তাদের মুখে সংস্কারের বুলি জনগণের সঙ্গে এক নির্মম প্রতারণা।
আজ সময় এসেছে মুখোশ ছেঁড়ার। সময় এসেছে জবাবদিহির। জনগণকে আর ফাঁকি দেওয়া যাবে না, কারণ ইতিহাস দেখেছে—যেখানে মুখে সংস্কার আর অন্তরে ফ্যাসিবাদ থাকে, সেখানে শেষ পর্যন্ত পতনই অনিবার্য।
-আল আমিন মিলু
আহ্বায়ক গনঅধিকার পরিষদ সরিষাবাড়ি উপজেলা শাখা জামালপুর