নিজস্ব প্রতিবেদক
বিপ্লব শব্দটি উচ্চারণে যেমন উত্তাল, বাস্তবে তেমনি জটিল ও দায়িত্ববাহী। ইতিহাস বলে, পৃথিবীর প্রতিটি বড় বিপ্লবই শুরু হয়েছে একটি চরম অসন্তোষ থেকে—শাসনের বৈষম্য, অন্যায়ের প্রতিবাদ কিংবা মানুষের বেঁচে থাকার অধিকার থেকে। কিন্তু বিপ্লব মানে শুধু শাসক বদল নয়, মানে সিস্টেম বদল, চিন্তার বদল, এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ—মানুষ বদল।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে “বিপ্লব” শব্দটি বহুবার ব্যবহৃত হয়েছে। কখনো তা হয়েছে গর্জনে, কখনো বা নিরব প্রতিরোধে। কিন্তু প্রতিবারই প্রশ্ন থেকে গেছে: এই বিপ্লবের পর আমরা কী পেয়েছি? মুখ বদল, নাকি মনোভাবের পরিবর্তন? মিছিল আর স্লোগানে যদি শুধু চেহারা বদলায়, তাহলে সেটাকে কি সত্যিকারের বিপ্লব বলা যায়?
বিপ্লবের প্রকৃত উদ্দেশ্য হলো—একটি নতুন সমাজ নির্মাণ, যেখানে অন্যায়ের জায়গা নেই, গণতন্ত্র শুধু ভোটে সীমাবদ্ধ নয়, বরং মানুষের জীবনের প্রতিটি পরতে প্রতিফলিত হয়। যেখানে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ন্যায়বিচার, কর্মসংস্থান—সবকিছুই ন্যায়ের ভিত্তিতে পরিচালিত হয়।
বিপ্লব মানে দায়িত্ব নেওয়া। যারা পরিবর্তনের ডাক দেয়, তাদেরকেই দেখাতে হয় বিকল্প পথ, তৈরি করতে হয় নেতৃত্বের নতুন মানচিত্র। যদি সেই নতুন রাস্তায়ও পুরাতন শোষণ ও দুর্নীতির ছাপ থেকে যায়, তাহলে সেই বিপ্লব কেবল একটি নাটক হয়—বাস্তবতা নয়।
আজ যখন আমরা বিপ্লবের কথা বলি, তখন দরকার আত্মসমালোচনা। আমরা কী সত্যিই পরিবর্তন চাই, নাকি কেবল ক্ষমতার পালাবদল? আমরা যদি ভাঙার পর গড়তে না পারি, তাহলে সেই ভাঙনই কাল হয়ে দাঁড়ায়।
বিপ্লব তখনই পূর্ণতা পায়, যখন তা মানুষকে মুক্ত করে, ভবিষ্যতের স্বপ্নে যুক্ত করে। অন্যথায়, বিপ্লব শুধু একটি শব্দ, যার গায়ে রক্ত থাকে, কিন্তু যার হৃদয়ে আলো নেই।
আল আমিন মিলু
আহ্বায়ক
গনঅধিকার পরিষদ
সরিষাবাড়ি উপজেলা শাখা
জামালপুর