নিজস্ব প্রতিবেদক
দেশ ভালো নেই।
এই বাক্যটি যেন এখন প্রতিটি মানুষের মুখে মুখে। শহর থেকে গ্রাম, শিক্ষিত থেকে অশিক্ষিত, তরুণ থেকে বৃদ্ধ—সবাই কোনো না কোনোভাবে একটাই কথা বলছে, “দেশের অবস্থা ভালো না”। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে—এই দেশ কার? কে এই দেশের হাল ধরবে? আর আমরা কি শুধুই দর্শক হয়ে থাকব?
একটা সময় ছিল, যখন মানুষ রাজনীতিকে সম্মান করত, নেতাদের দেখলে শ্রদ্ধা করত। এখন মানুষ রাজনীতি মানে বোঝে দুর্নীতি, চাঁদাবাজি আর ক্ষমতার অপব্যবহার। এখন মানুষের বিশ্বাস ভেঙে গেছে, কারণ যারা ক্ষমতায় যায়, তারা জনগণের কথা না শুনে নিজের ভাগ্য গঠনে ব্যস্ত। অন্যদিকে যারা বিরোধী, তারাও কখনো কখনো ক্ষমতায় যাওয়ার লোভে মূল উদ্দেশ্য ভুলে যায়।
শিক্ষা ব্যবস্থা বেহাল, স্বাস্থ্য সেবা দুর্নীতিতে জরাজীর্ণ, কর্মসংস্থান নেই বললেই চলে। শিক্ষিত তরুণরা এখন ‘স্কিলড’ হয়েও রিকশা চালায়, কেউ কেউ পাড়ি জমায় বিদেশে—যেখানে তারা পরিচ্ছন্নতা কর্মী হলেও অন্তত সম্মান পায়, আয় পায়। দেশের মাটিতে তার আর জায়গা নেই।
গ্রামে গরিব কৃষক দিনের পর দিন কষ্ট করে ধান ফলায়, কিন্তু ধানের দাম পায় না। শহরে সাধারণ মানুষ প্রতিদিন দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির সাথে যুদ্ধ করে বেঁচে থাকে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভয়ে মানুষ আতঙ্কিত, বিচার চায় না—কারণ বিশ্বাস করে না আর।
তবে কি এই দেশ কোনো অদৃশ্য শক্তির হাতে বন্দি? না, এই দেশের এই দুর্দশার জন্য আমরা সবাই দায়ী—নেতা যেমন দায়ী, তেমনি জনগণও দায়ী। আমরা ভোট দিই আবেগে, বেছে নিই অপরাধীকে, চুপ করে থাকি অন্যায়ের পাশে। প্রতিবাদ করি না, প্রশ্ন করি না।
তবে কি সব শেষ?
না, এখনো সময় আছে। প্রশ্ন করতে হবে। জবাব চাইতে হবে। সঠিক নেতৃত্ব তৈরি করতে হবে। রাজনীতিকে যদি আমরা আবার জনসেবায় পরিণত করতে পারি, তাহলেই এই দেশ একদিন ভালো হবে।
দেশ ভালো নেই—এটা শুধু বললেই চলবে না, কেন ভালো নেই, কী করলে ভালো হবে—তা নিয়েই ভাবতে হবে, কাজ করতে হবে।
আর মনে রাখতে হবে,
“দেশ ভালো হবে তখনই, যখন আপনি-আমি ভালো মানুষ হতে পারব।”
—
লেখক: আপনার মতোই এক দায়বদ্ধ নাগরিক।
আল আমিন মিলু
আহ্বায়ক
গনঅধিকার পরিষদ
সরিষাবাড়ি উপজেলা শাখা
জামালপুর