প্রদীপ চন্দ্র মম
রক্তে ভেজা রাজপথ ধরে হেঁটে চলে শিশু-কাফেলা,
পিঠে ব্যথা, চোখে খরা—তবু থামে না প্রাণের মেলা।
মায়ের কোল শূন্য আজ, বাবার মুখে ব্যথার রেখা,
বাঁচার তৃষ্ণা ধুলায় গড়া, হৃদয় যেন জ্বলন্ত শেখা।
পাঁচতারা সভ্যতা চেয়ে চেয়ে হাসে—
আকাশ জুড়ে যুদ্ধবিমান, নিচে মৃতদেহের বাসে।
বাজার ঘাটে চালের মূল্য স্বর্ণের চেয়েও দামি,
তিনবেলার খাবার যেন স্বপ্ন, শুধু ফাঁকি আর ফাঁকি।
টিভি চ্যানেলে খবর আসে—
‘আজও মরলো শত শত নির্দোষ প্রাণ;
পাশেই বিজ্ঞাপন—
‘নতুন ব্র্যান্ডে সুখের ঝলক!’
এ কেমন যুগ? এ কেমন বাণী?
মৃত্যুর মাঝে সুখের গানই বাজে যেন প্রাণে হানি।
প্যালেস্টাইন হোক, ইউক্রেন হোক,
ইসরাইল হোক, ইরান হোক,
পাকিস্তান কিংবা কাশ্মীর হোক,
রক্তে রাঙা সেই সব চোখ।
রোহিঙ্গা শিশু, সুদানী মায়েরা—
সবার কণ্ঠে এক সুর, ‘আমাদের কী ছিল অপরাধ; হায়রে সায়েরা?
‘ভবিষ্যতের খাতা খুলে দেখি—সব পাতা লাল, কালি নয় রক্তে লেখা,
বিজ্ঞানী বলে “চাঁদে যাচ্ছি”,
কিন্তু ধরায় ভাত নেই আজ বহু মুখে দেখা।
শিশু শেখে না ছড়া-কবিতা,
শিখে কিভাবে পালাতে হয় জীবন বাঁচাতে;;
ছবি আঁকে না রঙ-তুলিতে,
শুধুই আঁকে কফিন, আঁধার কফিন—আকাশ-গলিতে।
প্রতিটি রাত জেগে থাকে,
আলোকবর্ষ দূরের এক বিস্ময়ে—
যেখানে মানুষ কেবল মানুষ নয়,
ক্ষমতার পুতুল, যন্ত্রের রক্তময় খেলাঘরে।
তবুও কবি লিখে চলে—
ভালোবাসা, প্রতিরোধ আর স্বপ্নের কবিতা,
কারণ এই ধ্বংসস্তূপেও হয়তো কোনোদিন
ফুটে উঠবে নতুন সূর্য, নতুন বাঁচার সংগীতিতা।
তুমি যেই হও—
গরিব কিংবা শরণার্থী, কিংবা যুদ্ধের যাত্রী,
এই কবিতা তোমারই জন্য—
একটুখানি নিঃশ্বাস, একফোঁটা জীবন,একমুঠো পাথেয় আশা।
২৬ জুন, ২০২৫ খ্রিঃ.