নিজস্ব প্রতিবেদক
একটা জাতি যখন বড় কোনো সুযোগ পায়, তখন সেটা শুধু কাগুজে উন্নয়নের হিসাব নয়— সেটা আত্মজাগরণের সময়, আত্মসমীক্ষার সময়, আত্মশুদ্ধির সময়। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, আমরা কি পারলাম? এত বড় সুযোগ, এত সম্ভাবনার দরজা খোলা থাকার পরও আমরা কি একটু শুধরাতে পেরেছি?
আমরা পেলাম ডিজিটাল বাংলাদেশ, পেলাম পদ্মা সেতু, পেলাম বিদ্যুৎ, পেলাম সোনালী উন্নয়নের গল্প। কিন্তু পেলাম কি নাগরিক দায়িত্ববোধ, নৈতিকতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত? পেলাম কি সমাজের শুদ্ধি, রাষ্ট্রের স্বচ্ছতা, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সত্যিকারের উদাহরণ?
আমরা শিখলাম না। বরং প্রমাণ করতে ব্যস্ত হয়ে পড়লাম— আমরা এখনও ঘাওরা, আমরা এখনও জাওরা।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব ছড়ানো, অপ্রয়োজনীয় বিতর্কে জড়ানো, অন্ধ দলীয় আনুগত্যে বুঁদ হয়ে থাকা—এই কি আমাদের শিখে ওঠা?
অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর পরিবর্তে আমরা নীরব দর্শক হলাম।
ভবিষ্যতের কথা ভাবার বদলে আমরা এখনো “আপন গরু বোঝাই”তেই ব্যস্ত।
শিক্ষা খাতে নকল, স্বাস্থ্য খাতে দুর্নীতি, প্রশাসনে দায়িত্বহীনতা, সমাজে মূল্যবোধের অবক্ষয়—এগুলো তো সেই পুরনো রোগ। তাহলে এত সুযোগ পেলেও, এত উন্নয়ন হলেও, আমরা কেন পাল্টাতে পারলাম না?
কারণ আমরা এখনো উপলব্ধি করিনি— একটি জাতি শুধু ব্রিজ বানিয়ে বা বড় বড় বিল্ডিং তুলে উন্নত হয় না। একটি জাতি উন্নত হয় চিন্তায়, নৈতিকতায়, দায়িত্বে, সাহসে।
আর সেই জায়গাটাতেই আমরা পিছিয়ে। সুযোগ এসেছে, উন্নয়ন হয়েছে, কিন্তু আমরা মানুষ হিসেবে বড় হতে পারিনি।
আজও আমরা নিজেকে শুধরে নেওয়ার বদলে একে অপরকে দোষ দিচ্ছি।
আজও আমরা বলছি, “ওরা খারাপ”, কিন্তু “আমি কোথায় ভুল করছি” সেটা ভাবছি না।
এভাবেই আমরা নিজেরাই প্রমাণ করছি— আমরা এখনো জাতি হয়ে উঠতে পারিনি, আমরা এখনো জনতা হয়েই রয়ে গেছি।
তবুও আশা করি, একদিন এই জাতি আয়নায় নিজেকে দেখবে। নিজেকে প্রশ্ন করবে। এবং উত্তরও খুঁজে পাবে।
লেখক: একজন ব্যথিত নাগরিক
আল আমিন মিলু