
দুর্গাপুর (রাজশাহী) প্রতিনিধিঃ মোঃ মাসুদ রানা তুষার
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজশাহী–৫ (দুর্গাপুরন–পুঠিয়া) আসন থেকে স্বতন্ত্র এমপি প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন জুলফার নাঈম মোস্তফা। দাখিলের শেষ দিনে হাজারো নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে তার মনোনয়ন জমা দেওয়ার ঘটনা পুরো এলাকায় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে।
সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) বিকেল ৪টায় দুর্গাপুর উপজেলা পরিষদ চত্বরে পৌঁছান জুলফার নাঈম মোস্তফা। এ সময় উপজেলার প্রধান প্রধান সড়ক জনসমুদ্রে পরিণত হয়। তাকে একনজর দেখতে এবং সমর্থন জানাতে দুর্গাপুর ও পুঠিয়ার বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ দলে দলে এসে জড়ো হন।
নির্বাচনী বিধি অনুসরণ করে পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল নিয়ে তিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসতুরা আমিনার হাতে মনোনয়নপত্র জমা দেন। মনোনয়ন জমাদানকে কেন্দ্র করে পুরো উপজেলা প্রাঙ্গণ ও আশপাশের এলাকা উৎসবমুখর পরিবেশে রূপ নেয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সতর্ক অবস্থানে ছিল।
জুলফার নাঈম মোস্তফা দুইবারের সফল সাবেক সংসদ সদস্য, দুর্গাপুর–পুঠিয়ার জনপ্রিয় জননেতা মরহুম এডভোকেট নাদিম মোস্তফার সুযোগ্য সন্তান। বাবার রাজনৈতিক আদর্শ ও জনপ্রিয়তার ধারাবাহিকতায় তিনি দীর্ঘদিন ধরে এলাকার সাধারণ মানুষের সুখ-দুঃখে পাশে থেকে কাজ করে যাচ্ছেন।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে মাঠে নামার পর অল্প সময়ের মধ্যেই তিনি ব্যাপক গণসমর্থন লাভ করেন। তবে দলীয়ভাবে রাজশাহী–৫ আসনে অধ্যাপক নজরুল ইসলাম মন্ডলকে মনোনয়ন দেওয়ার খবরে এলাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে তৃণমূল নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ জুলফার নাঈম মোস্তফার পক্ষে রাজপথে নেমে আসেন।
পরবর্তীতে তিনি স্পষ্ট ঘোষণা দেন, দলীয় মনোনয়ন পরিবর্তন না হলে সাধারণ মানুষের স্বার্থে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেবেন। তার সেই ঘোষণার পরই এলাকাজুড়ে ব্যাপক সাড়া পড়ে এবং হাজারো মানুষ তাকে সঙ্গে নিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিতে দুর্গাপুর উপজেলা পরিষদে হাজির হন।
মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর জুলফার নাঈম মোস্তফা বলেন, আমি ক্ষমতার জন্য নয়, মানুষের ভালোবাসা ও অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য নির্বাচনে এসেছি। আমার বাবা এডভোকেট নাদিম মোস্তফা আজীবন এই এলাকার মানুষের জন্য কাজ করেছেন। আমি সেই আদর্শ নিয়েই এগিয়ে যেতে চাই। আজ যেভাবে সাধারণ মানুষ আমাকে ঘিরে দাঁড়িয়েছে, সেটাই আমার সবচেয়ে বড় শক্তি। ইনশাআল্লাহ জনগণের রায়ে বিজয়ী হয়ে দুর্গাপুর–পুঠিয়ার উন্নয়নে নিজেকে উৎসর্গ করবো।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন দুর্গাপুর উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এসএম আকবর আলী বাবলু, পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি মোঃ আব্দুল আজিজ মন্ডল, পুঠিয়া উপজেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ রফিকুল ইসলাম রফিক, উপজেলা যুবদলের সাবেক আহ্বায়ক মোঃ চয়েন উদ্দিন শেখ, সাধারণ সম্পাদক আরমান কবির সুজন, দুর্গাপুর উপজেলা যুবদলের সহ-সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার কাউছার আহমেদ, দুর্গাপুর উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক ইমন আহমেদ সুমন, পুঠিয়া বিএনপি নেতা পলান সরদার, পুঠিয়া যুবদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক হোদা বাবুসহ দুর্গাপুর ও পুঠিয়ার অসংখ্য নেতাকর্মী।
মনোনয়নপত্র জমাদানের মধ্য দিয়ে রাজশাহী–৫ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জুলফার নাঈম মোস্তফার নির্বাচনী মাঠে শক্ত অবস্থান স্পষ্ট হয়েছে বলে মনে করছেন স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।