
প্রদীপ চন্দ্র মম
এটা কোনো ধর্মের রীতি নয়—
এটা রাষ্ট্রীয় অন্ধকারের উৎসব।
এখানে প্রশ্ন করলেই সন্দেহ,
সন্দেহ করলেই অপরাধ,
আর গুজবই হয়ে ওঠে
তাৎক্ষণিক আদালত।
মিথ্যা অভিযোগের দড়িতে
একজন মানুষের নাম ঝুলে থাকে—
দিপু দাস।
একটি নাম নয়,
একটি নিথর বিবেক—
যাকে পুড়িয়ে দিয়ে
ক্ষমতা নিজের দায় ঝাড়ে।
কাজ থেকে টেনে আনা হয়,
আইনের আগেই রায় ঘোষণা হয়।
ঘুষির ভাষায় লেখা হয় “সত্য”,
চিৎকারকে বলা হয় অপরাধ,
আর উন্মত্ততাকে দেওয়া হয়
ধর্মীয় বৈধতা।
গাছের সঙ্গে বেঁধে
মানুষকে বানানো হয় কাঠ—
লাশের গায়ে আগুন,
আর চারপাশে দাঁড়িয়ে থাকে
ভিড় নামের রাষ্ট্র,
নীরব প্রশাসন,
আর ভীত আইনের চোখ।
ধর্ম তো বলে—
একটি প্রাণ বাঁচানো মানে
সমগ্র মানবতাকে বাঁচানো।
কিন্তু এখানে
ধর্মের মুখোশ পরে
হিংস্রতা মিছিল করে,
আর শাসক বলে—
“পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে।”
কে জানে না,
কে বলেছিল,
কাকে বলেছিল—
এই প্রশ্নগুলো পুড়ে যায়
রাষ্ট্রীয় অবহেলায়।
তদন্ত আসে পরে,
লাশ আসে আগে।
রাষ্ট্র তখন বিবৃতি দেয়,
আইন হয়ে যায়
সংবাদ সম্মেলন।
আর মানবতা বন্দি থাকে
ফেসবুক স্ট্যাটাসে,
কালো ব্যানারে,
একদিনের শোকে।
আজ দিপু,
কাল আরেক নাম—
সংখ্যালঘু,
ভিন্নমত,
নাকি শুধু ক্ষমতাহীন মানুষ।
এই দেশে
অপরাধ মানুষ হয়ে জন্মানো।
হে ধর্ম,
তোমার নামে যারা খুন করে
তারা শুধু খুনি নয়—
তারা রাষ্ট্রের পোষা নীরবতা।
আর যে রাষ্ট্র খুনে চুপ থাকে,
সে নিজেই একদিন
খুনির কাঠগড়ায় দাঁড়ায়।
এই দেশ কি এমনই থাকবে?
যেখানে লাশ জ্বলে,
আর সরকার বলে—
“ঘটনা দুঃখজনক, তদন্ত হবে।”
না।
এই আগুন নিভতেই হবে—
শুধু লাশের নয়,
রাষ্ট্রীয় ভণ্ডামির।
এই নীরবতা ভাঙতেই হবে—
নচেৎ একদিন
ধর্ম নয়,
রাষ্ট্র নয়—
মানুষ নামের ধারণাটাই
এই ভূখণ্ড থেকে
মুছে যাবে।
২০/১২/২০২৫ খ্রিঃ।