নিজস্ব প্রতিবেদক
লাখো মানুষের চোখে যে অশ্রু, বুকে যে ভার, হৃদয়ে যে ক্ষোভ—সব মিলিয়ে সেই জানাজা বলে দিয়েছে, এ দেশের মানুষ আর মিথ্যা, দুর্নীতি আর দখলদার রাজনীতি চায় না। মানুষ চায় একটি ভালো, ন্যায়ভিত্তিক, আদর্শিক রাজনীতি।
শহিদ শরিফ ওসমান হাদী কোনো ক্ষমতার লোভে রাজনীতি করেননি। তিনি রাজনীতিকে দেখেছিলেন মানুষের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার হাতিয়ার হিসেবে। তার রাজনীতি ছিল প্রশ্ন করার সাহস, অন্যায়ের সামনে মাথা নত না করার দৃঢ়তা। তিনি জানতেন—এই দেশে ভালো রাজনীতি করতে গেলে মূল্য দিতে হয়। তবুও তিনি পিছু হটেননি। কারণ তিনি বিশ্বাস করতেন, একদিন মানুষ জেগে উঠবেই।
সেই জাগরণের দৃশ্যই আমরা দেখেছি তার জানাজায়। রাজপথে নেমে আসা কোটি মানুষের উপস্থিতি ছিল একটি গণরায়—ভোটকেন্দ্রে নয়, কফিনের পাশে দাঁড়িয়ে দেওয়া রায়। এই রায় বলছে, শহিদ হাদী একা ছিলেন না; তিনি ছিলেন কোটি মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতীক। যারা মুখে ভালো রাজনীতির কথা বলে না, বরং জীবনের বিনিময়ে তা প্রমাণ করে।
শহিদ হাদীর রক্ত আমাদের মনে করিয়ে দেয়, আদর্শ হত্যা করা যায় না। একজন মানুষকে থামানো যায়, কিন্তু তার বিশ্বাসকে নয়। তার মৃত্যুতে যারা ভেবেছিলো ভয় ছড়িয়ে দেওয়া যাবে, তারা বুঝতে পারেনি—এই মৃত্যু ভয় নয়, সাহস জন্ম দিয়েছে। নতুন করে মানুষ প্রশ্ন করতে শিখেছে—কেন ভালো মানুষরা টিকে থাকতে পারে না? কেন ন্যায়ের রাজনীতি এ দেশে অপরাধ হয়ে দাঁড়ায়?
আজ শহিদ ওসমান হাদীর কোটি জনতার জানাজা ইতিহাসের পাতায় একটি মাইলফলক। এটি প্রমাণ করেছে, এই দেশের মানুষ এখনো বিবেকহীন হয়নি। তারা এখনো ভালো ও মন্দের পার্থক্য বোঝে। তারা এখনো একজন শহিদের কফিনের পাশে দাঁড়িয়ে বলতে পারে—আমরা এই রাজনীতিই চাই।
হাদী বেঁচে থাকবেন স্লোগানে নয়, মানুষের চেতনায়। যতদিন এই দেশে অন্যায় থাকবে, ততদিন শহিদ শরিফ ওসমান হাদীর নাম উচ্চারিত হবে সাহসের প্রতিশব্দ হিসেবে। তার রক্তের ঋণ শোধ হবে একদিন—একটি সত্যিকারের ভালো রাজনীতির প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে
আল আমিন মিলু
রাজনৈতিক বিশ্লেষক গবেষক ও
আহ্বায়ক গনঅধিকার পরিষদ
সরিষাবাড়ি উপজেলা শাখা জামালপুর