
মোঃ রবিউল ইসলাম মিনাল:গোদাগাড়ী রাজশাহী জেলা প্রতিনিধি:
রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে চলতি মৌসুমে টমেটো চাষে বড় ধরনের সংকটে পড়েছেন স্থানীয় কৃষকরা। ‘টমেটোর ভাণ্ডার’ হিসেবে পরিচিত এই উপজেলায় এবার কাঙ্ক্ষিত ফলন না হওয়ায় কৃষকদের মধ্যে তীব্র হতাশা বিরাজ করছে। কৃষকদের অভিযোগ, নিম্নমানের বীজের কারণেই এবার আশানুরূপ ফলন আসেনি। ফলে বিনিয়োগ করা মোটা অঙ্কের টাকা ঘরে তোলা নিয়ে তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা।
মাঠে ফলন কম, বিপাকে কৃষক
সরেজমিনে গোদাগাড়ীর রামনগর, আমতলাসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, চাষিরা জমি থেকে টমেটো তুলছেন ঠিকই, কিন্তু বিগত বছরের তুলনায় এবার প্রতি বিঘা জমিতে টমেটোর পরিমাণ অনেক কম। রামনগরের কৃষকরা জানান, বীজের সমস্যার কারণে গাছগুলো সঠিকভাবে বাড়তে পারেনি এবং ফলের আকারও ছোট হয়েছে। জমিতে যে পরিমাণ শ্রম ও অর্থ ব্যয় হয়েছে, বর্তমান বাজার দরে সেই খরচ উঠবে কি না, তা নিয়ে অনেকেই শঙ্কিত। হতাশ এক কৃষক আক্ষেপ করে বলেন, “সব খরচ বাদে এবার হাতে কিছু থাকবে বলে মনে হচ্ছে না।”
হ্যালিপ্যাড ও আমতলায় টমেটো পাকানোর ধুম
মাঠের ফলন নিয়ে কৃষকরা দুশ্চিন্তায় থাকলেও ব্যবসায়ীদের ব্যস্ততা চোখে পড়ার মতো। রামনগর গ্রামের হ্যালিপ্যাড মাঠসহ অন্তত ৩০টি স্থানে চলছে টমেটো প্রক্রিয়াজাতকরণের কাজ। সেখানে খোলা আকাশের নিচে রোদে শুকানো হচ্ছে হাজার হাজার মণ কাঁচা টমেটো। কোনোটি হালকা লাল, কোনোটি হালকা হলুদ। আবার কোনো কোনো স্থানে টমেটোর বড় বড় স্তূপ খড় দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছে।
ব্যবসায়ীরা জানান, মাঠ থেকে ৪টি (৪৫ কেজি) হিসেবে ৭০০-৮০০ টাকা দরে কাঁচা টমেটো কেনা হচ্ছে। এরপর তাতে ‘ইথিফন’ ও ‘ডায়াথিন এম’ জাতীয় ওষুধ স্প্রে করে প্রায় ১০ দিন রোদে শুকিয়ে লাল করা হয়। সম্পূর্ণ লাল রঙ ধারণ করলেই এগুলো ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেটসহ দেশের বড় বড় আড়তগুলোতে ট্রাকযোগে পাঠানো হয়।
দেড়শ কোটি টাকার বাণিজ্যে ঝুঁকি
গোদাগাড়ীতে টমেটোর এই ভরা মৌসুম চলবে আগামী আরও অন্তত দুই মাস। ধারণা করা হচ্ছে, এই সময়ে শুধু গোদাগাড়ী থেকেই প্রায় দেড়শ কোটি টাকার টমেটো কেনাবেচা হবে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ব্যবসায়ীরা এসে এখানে অস্থায়ী বাড়ি ভাড়া নিয়ে আস্তানা গেঁড়েছেন।
তবে ব্যবসায়ীদের মনেও রয়েছে ভয়। ঢাকা থেকে আসা ব্যবসায়ী আজহার ও স্থানীয় আব্দুল জাব্বার জানান, মৌসুমের শুরুতেই টমেটোর দাম অনেক চড়া। । চড়া দামে কেনা এই টমেটো বাজারে নিয়ে সঠিক দাম না পাওয়া গেলে বড় ধরনের লোকসানের মুখে পড়তে হবে তাদের।
রাজশাহী জেলা প্রতিনিধি
রবিউল ইসলাম মিনাল
01712483534