
নিজস্ব প্রতিবেদক
ইয়ার পোর্ট—যে স্থাপনাটি দেশের বাণিজ্য ও আমদানি-রপ্তানির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ—আজ সেখানে নিরাপত্তাহীনতার নতুন নাম হয়ে উঠেছে “চোরচক্র”। বছরের পর বছর ধরে এ চক্রটি অসংখ্য ব্যবসায়ী, শ্রমজীবী ও সাধারণ মানুষকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। অথচ আশ্চর্যের বিষয় হলো, এই অপকর্ম থামানোর মতো কঠোর নজরদারি বা কার্যকর পদক্ষেপ কোথাও দেখা যায় না। ফলে রাষ্ট্রীয় সম্পদ যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, তেমনি জনবিশ্বাসও ভেঙে পড়ছে।
প্রথমত, পোর্ট এলাকায় চোরদের দৌরাত্ম্য কোনো হঠাৎ ঘটনার ফল নয়—এটি দীর্ঘদিনের দুর্বল নিরাপত্তা ব্যবস্থা, প্রভাবশালী বৃত্তের ছায়া ও প্রশাসনিক শৈথিল্যের ফসল। দিনের পর দিন মালামাল হারানো, কনটেইনার থেকে মাল চুরি, যন্ত্রাংশ উধাও—সবই যেন স্বাভাবিক হয়ে দাঁড়িয়েছে। যারা জীবিকার তাগিদে পোর্টে কাজ করেন, তারাই আজ সবচেয়ে বেশি আতঙ্কগ্রস্ত।
দ্বিতীয়ত, এই চোরচক্র শুধু ক্ষুদ্র অপরাধী নয়—এদের পেছনে রয়েছে অভ্যন্তরীণ সহযোগী ও প্রভাবশালীদের আশ্রয়–প্রশ্রয়। চোরদের নিরাপদ অভয়ারণ্য তৈরি না হলে কোনদিনই এই অপরাধ বন্ধ হবে না। পোর্ট নিরাপত্তার প্রশ্ন এলে দায় চাপিয়ে দেওয়ার সংস্কৃতি বন্ধ করতে হবে।
তৃতীয়ত, এখন সময় এসেছে চোরদের সরিয়ে দেওয়া নয়—আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়ার। শুধু ধরলেই হবে না, তদন্ত করে তাদের পেছনে থাকা শক্তিগুলোকেও বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। কারণ, বিচারহীনতার সংস্কৃতি যতদিন চলবে, অপরাধ ততদিন বাড়বে।
দেশের অর্থনীতির প্রবাহ রক্ষা করতে হলে ইয়ার পোর্টকে সুরক্ষিত রাখা অপরিহার্য। এজন্য প্রয়োজন—
পোর্ট এলাকায় ২৪/৭ আধুনিক নজরদারি ব্যবস্থা স্থাপন
নিয়োজিত সদস্যদের অভ্যন্তরীণ অডিট ও জবাবদিহির কাঠামো
চোরচক্রের বিরুদ্ধে বিশেষ টাস্কফোর্স ও দ্রুত বিচার
কর্মীদের জন্য নিরাপদ কর্মপরিবেশ এবং অভিযোগ জানানোর নিশ্চয়তা
ইয়ার পোর্টকে যদি রাষ্ট্রীয় স্বার্থের জায়গা মনে করা হয়, তাহলে সেখানে কোনো চোরচক্রের স্থান হতে পারে না। রাষ্ট্রকে এখনই দেখাতে হবে—চুরি, দুর্নীতি ও নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স শুধু কথার বুলি নয়, বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি।
সময় এসেছে চোরদের সরিয়ে নয়, তাদের বিচার করে পোর্টকে নিরাপদ ও বিশ্বাসযোগ্য করে তুলবার। দেশের অর্থনীতির স্বার্থে এটা কোনো বিকল্প নয়—এটাই এখন সময়ের দাবি।
আল আমিন মিলু
আহ্বায়ক
গনঅধিকার পরিষদ
সরিষাবাড়ি উপজেলা শাখা জামালপুর