প্রদীপ চন্দ্র মম
রাষ্ট্র আজ মৌনে মুখ ঢাকে,
নীরবতার আঁধারে ফুটে ওঠে উগ্রতার বিষ—
মসজিদের মিনারে, মন্দিরের চূড়ায়,
শিশুর চোখে, পাঠ্যবইয়ের পাতায়।
বাংলাদেশ—
তুমি কি শুনছো নিজের হৃদস্পন্দন?
না কি শকুনের ডানার শব্দে
ঢেকে গেছে মানুষের হাহাকার?
চারদিকে শুধু হায়েনার দাঁত,
শিকার বানানো বিশ্বাস,
আর পতাকার রঙে লেগে আছে মৃতের গন্ধ—
তবু ব্যাপক নীরবতা,
তবু প্রশ্নহীন মিছিল!
এই কি সেই দেশ,
যেখানে ভাষা রাইফেলের নল ভেদ করে জন্ম নিয়েছিল?
এই কি সেই মাটি,
যেখানে মানুষ মরতে জানত—
কিন্তু মাথা নোয়াতে জানত না?
পথিক,
তুমি কি তবে পথ হারাইয়াছ?
নাকি পথ দেখানোর মানুষই আজ নিখোঁজ?
হে বাংলার স্বাধীনচেতা মানুষ,
আর কতদিন তুমি
নিজের সন্তানকে ভয় শেখাবে—
“চুপ থাকো, কথা বলো না”?
আর কতদিন তুমি
অন্যায়ের পাশ দিয়ে
চোখ নামিয়ে হেঁটে যাবে
নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে?
মনে রেখো—
নীরবতা কখনো নিরাপত্তা নয়,
নীরবতা হলো অন্যায়ের অক্সিজেন।
আজ শকুনেরা পতাকা ওড়ায়,
হায়েনারা ধর্মের মুখোশ পরে,
আর মানুষ শুধু বলে—
“সময় খারাপ”!
না,
সময় খারাপ নয়—
আমরাই ভয়ংকর রকম চুপ।
তাই এসো,
অস্ত্র হাতে নয়— আলো হাতে রাস্তায় নামি,
ঘৃণার বিরুদ্ধে মানবতা নিয়ে দাঁড়াই,
মিথ্যার বিরুদ্ধে সত্যের মিছিল করি।
পতাকা হাতে নামো—
কিন্তু রক্ত নয়,
বিবেক ঝরুক রাজপথে।
এই দেশ আত্মবিনাশের পথে হাঁটছে—
এ কথা শুধু কবিতায় নয়,
মানুষের কণ্ঠে কণ্ঠে ছড়িয়ে দাও।
কারণ
যে জাতি প্রশ্ন করতে ভুলে যায়,
সে জাতি একদিন
নিজের অস্তিত্বকেই
প্রশ্নচিহ্নে বদলে ফেলে।
০২/১২/২০২৫ খ্রিঃ।