
নিজস্ব প্রতিবেদক
বাংলার ইতিহাসে “বারো ভুইয়া” শব্দটি শুধু একটি রাজনৈতিক অধ্যায় নয়—এটি প্রতীক স্বার্থান্বেষী শক্তি, ব্যক্তিগত আধিপত্য ও বিচ্ছিন্নতার। আজকের বাংলাদেশে এই মানসিকতার প্রতিচ্ছবি আমরা বারবার দেখি। তাই আজও যখন কেউ ভালো কিছু করার সৎ স্বপ্ন নিয়ে এগিয়ে আসে, তখন পথটা সহজ হয় না; বরং প্রতিটি পদক্ষেপে বাধা হয়ে দাঁড়ায় আধুনিক দিনের বারো ভুইয়ারা—যারা পরিবর্তনের চেয়ে নিজের ক্ষমতাকে বড় করে দেখে।
ভালো কিছু করার সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো ঐক্যের অভাব। আমরা দল করি, গ্রুপ করি, পাড়া-ভিত্তিক বিভাজন করি; কিন্তু দেশের জন্য এক হয়ে কাজ করার সংস্কৃতি এখনো গড়ে উঠেনি। যে সমাজে পরামর্শের বদলে সমালোচনা বেশি, সেখানে সৃজনশীল চিন্তা ধাক্কা খায়, নতুন উদ্যোগ সন্দেহের চোখে দেখা হয়, আর তরুণদের স্বপ্নকে তুচ্ছ করে দেওয়া হয়।
তারপর আছে স্বার্থের রাজনীতি। যে মানুষের হাতে ক্ষমতা, সে ক্ষমতার অপব্যবহার করলে অগ্রগতি আটকে যায়। আপনি উন্নয়ন, সংস্কার, নৈতিক রাজনীতি কিংবা জনগণের অধিকার নিয়ে কথা বললে অনেকেই মনে করে—আপনি তার ব্যক্তিগত এলাকা দখল করতে যাচ্ছেন! ফলে অপপ্রচার, বাধা, হুমকি—সবই এসে দাঁড়ায় উন্নত স্বপ্নের সামনে।
এই দেশে ভালো কিছু করতে হলে লাগে শুধু ইচ্ছা নয়—ধৈর্য, সততা ও সাহস। কারণ বারো ভুইয়ার মানসিকতার মানুষ আপনাকে দমিয়ে রাখতে চাইবে। কিন্তু ইতিহাস বলে, বাংলাকে শেষ পর্যন্ত রক্ষা করেছে কোনো স্বার্থান্বেষী শক্তি নয়—মানুষের চেতনা, ঐক্য এবং সৎ নেতৃত্ব।
আজ প্রয়োজন সেই চেতনার পুনর্জাগরণ।
যারা দেশকে নিজের মনে করে; যারা স্বপ্ন দেখে—দুর্নীতি নয়, ন্যায়বিচারই হবে উন্নয়নের ভিত্তি—তাদের একত্র হতে হবে। নতুন প্রজন্মকে ভয়ের রাজনীতি নয়, সৎ সাহসের রাজনীতি শেখাতে হবে। তাহলেই বারো ভুইয়ার দেশ একদিন হবে সবার দেশ—ন্যায়, অধিকার ও উন্নয়নে সমৃদ্ধ।
ভালো কিছু করা কঠিন—কিন্তু অসম্ভব নয়।
যদি মানুষ জেগে ওঠে, যদি আমরা নিজেদের স্বার্থের চেয়ে দেশের ভবিষ্যতকে বড় করে দেখতে শিখি, তবে যেকোনো প্রতিরোধ ভেঙে যাবে। পরিবর্তন আসবেই, এবং তা আসবে মানুষের হাত ধরেই।
চাই শুধু সাহসী স্বপ্ন আর দীর্ঘস্থায়ী লড়াই।
বাংলার মাটিতে ভালো কিছু—হবে, অবশ্যই হবে।
আল আমিন মিলু
আহ্বায়ক
গনঅধিকার পরিষদ
সরিষাবাড়ি উপজেলা শাখা জামালপুর