কামরুল হাসান
গোল আলু অতি পরিচিত একটি সব্জি। সব্জি হিসেবে এর নানাবিদ ব্যবহার লক্ষনীয়। শুধু তাই নয়, এটি অনেকটা সহজ লভ্যও। তাই এটি ছোট-বড় নানা রকমের মাছে যেমন সব্জি হিসেবে খাটে, তেমন বিভিন্ন মাংসেও খাটে। আবার শুটকিতেও। এমন কি নিরামিশেও। অগত্যা ভর্তা। এ ছাড়া ভাজিতো আছেই। এর মুখ রোচক নানাপদ খাবার সহজেই রসনা বিলাসীদের মনহরে। নানাবিদ উপকারী এ সব্জির প্রতি আমাদের তেমন কদর নেই। এ জন্যই এর তেমন মূল্যও নেই। তবে যারা জানেন, তারা কিন্তু মোডিফাই করে হলেও ঠিকই এর মূল্য বাড়ান। এটা যারা পারেন, তারা করেও দেখান। সুতরাং, তারাই শুধু এর সুবিধাটা ভোগ করে থাকেন। আমরা মুখে অনেক কিছুই পারলেও কিন্তু কাজের ক্ষেত্রে তেমন পারিনা। তবে অন্তত: বেসুরে হলেও ‘গেলনা মোর এ দু:খের কপাল’ এ গানটা বেশ গাইতে পারি।
কৃষিবিদদের সাথে কথা বলে জানা গেছে-গোল আলুর বাজার দাম ভালো হলে কৃষক সমাজে এর কদর বাড়ে। তাই হুমড়ি খেয়ে এটির আবাদে ঝুঁকে পড়ে। এতোটাই বেশি ঝুঁকে যে, শেষ মেশ অন্য সব ছেড়ে ‘এক ধ্যান এক মন’ নীতি অবলম্বন করে চলে। ফলে আবাদ বেশি, তাই উৎপাদনও বেশি। অর্থনীতির কথায় ‘যোগান বেশি, তাই চাহিদাও কম।’ সুতরাং, ক্রেতা কম তাই দামও কম। গত মওসুমের আগের মওসুমে ভালো দাম পেয়ে কৃষক পর্যায়ে আলু আবাদে ব্যাপক সাড়া পড়ে। তাই এর উৎপাদন বেড়ে যায়। পক্ষান্তরে চাহিদা কমে যায়। এ জন্য বর্তমানে আলুর বাজার খুবই নি¤œগামী। এতোটাই যে, এক বস্তা আলুর দামে হিমাগার ভাড়া মেটানোই কৃষকদের এখন কষ্টকর। ফলে আলুর দাম ফাও! অতএব, গোল আলুর দামে গোলমাল বলেই কৃষকদের মনে গন্ডগোল পাকাচ্ছে। তবে কৃষিবিদদের মতে, আলুর দাম বাড়াতে হলে- আলুর তৈরী নানাবিদ মজাদার খাদ্যসামগ্রী প্রস্তুতের পরিকল্পনা থাকতে হবে। সেই অনুযায়ী বৈদেশিক বাজার ধরতে হবে। কৃষক পর্যায়ে কৃষিঋণ ও কৃষি উপকরনের বিষয়ে সহজ নীতি চালু করতে হবে। সংরক্ষন পদ্ধতি সংক্রান্ত দেশীয় কলা-কৌশল রপ্ত করে ব্যয় কমাতে হবে। কারন-‘কৃষক বাঁচলে দেশ বাঁচবে।’
(লেখক: কামরুল হাসান#০১৯১৪-৭৩৫৮৪২# সংগঠক, মানবাধিকার ও সংবাদ কর্মী এবং কলাম ও ফিচার লেখক)