নিজস্ব প্রতিবেদক
বাংলাদেশে আজ সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক প্রশ্ন— সুষ্ঠু নির্বাচন কি সম্ভব?
এ প্রশ্নটি শুধু রাজনৈতিক কর্মী বা বিশ্লেষকদের মুখে নয়, এখন সাধারণ মানুষের আলোচনার কেন্দ্রেও স্থান পেয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ের মাঠ পর্যায়ের বাস্তবতায় দেখা যাচ্ছে, প্রায় ৮০ ভাগ মানুষ সুষ্ঠু নির্বাচনের বিষয়ে এখনো সংকিত ও সন্দিহান। তাদের দৃঢ় বিশ্বাস— বর্তমান রাজনৈতিক কাঠামো ও প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণের মধ্যে নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন করা সম্ভব নয়।
এই অবিশ্বাসের মূল কারণ হলো বিগত এক দশকের নির্বাচনী ইতিহাস। ২০১৪ সালের একতরফা নির্বাচন, ২০১৮ সালের ভোটারবিহীন রাতের ভোট— এসব ঘটনাই জনমানসে গভীর ক্ষত সৃষ্টি করেছে। মানুষ মনে করে, যেখানে প্রশাসন, নির্বাচন কমিশন, ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দলীয় প্রভাবে পরিচালিত হয়, সেখানে ভোটাধিকার কেবল কাগজে সীমাবদ্ধ থাকে।
তাই আজ জনগণের মুখে একটাই দাবি—
👉 “জাতীয় সরকার ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।”
জাতীয় সরকারের ধারণাটি নতুন নয়। অতীতে রাজনৈতিক অচলাবস্থা নিরসনে অনেক দেশেই এই পদ্ধতি প্রয়োগ হয়েছে। এমন সরকার সাধারণত নির্দলীয়, দক্ষ, ও অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের নিয়ে গঠিত হয়, যারা ক্ষমতার স্বার্থে নয় বরং দেশের স্বার্থে কাজ করেন। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এমন একটি সরকার হলে, তার প্রধান কাজ হবে—
1. একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করা,
2. প্রশাসনকে দলীয় প্রভাবমুক্ত করা,
3. সবার জন্য সমান রাজনৈতিক মাঠ নিশ্চিত করা,
4. সংবিধান ও নাগরিক অধিকার পুনরুদ্ধার করা।
বর্তমান পরিস্থিতিতে জনগণ যে অবিশ্বাসে ভুগছে, তা শুধুই রাজনৈতিক নয়—এটি রাষ্ট্রীয় বিশ্বাসযোগ্যতার সংকট। মানুষ ভোট দিতে চায়, কিন্তু বিশ্বাস করতে পারে না যে তার ভোট গণনায় কোনো মূল্য পাবে। এই অবস্থা চলতে থাকলে, দেশে গণতন্ত্রের শিকড় আরও দুর্বল হবে, তরুণ প্রজন্ম রাজনীতি থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে, এবং সমাজে হতাশা ও ক্ষোভ আরও বাড়বে।
এখন সময় এসেছে, রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের স্বার্থের চেয়ে জাতীয় স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিক।
একটি “অন্তর্বর্তী জাতীয় সরকার” গঠন করে সবাই মিলে একটি স্বচ্ছ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পথ খুলে দিতে হবে। জনগণের বিশ্বাস পুনরুদ্ধার করতে পারলেই বাংলাদেশ আবারও গণতন্ত্রের পথে ফিরতে পারবে।
সুষ্ঠু নির্বাচন শুধু একটি প্রশাসনিক প্রক্রিয়া নয়—এটি দেশের ভবিষ্যৎ, জাতির মর্যাদা ও নাগরিকের সম্মানের প্রশ্ন।
তাই এখন সময় এসেছে একটাই সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়ার—
👉 জাতীয় সরকারই সুষ্ঠু নির্বাচনের একমাত্র গ্যারান্টি।
আল আমিন মিলু
আহ্বায়ক
গনঅধিকার পরিষদ
সরিষাবাড়ি উপজেলা শাখা
জামালপুর