প্রদীপ চন্দ্র মম
আমি আর থাকতে চাই না
এই মানবতাহীন পৃথিবীতে—
যেখানে প্রতিদিন সূর্য ওঠে রক্তমাখা চিঠি হাতে,
আর সকাল মানে কেবল
নতুন কোনো শোকের সূচনা।
যেখানে হাসি মানে ছদ্মবেশ,
ভালোবাসা মানে বিনিময়ের হিসাব।
যেখানে মানুষ শুধু বেঁচে থাকে,
মনুষ্যত্ব ধীরে ধীরে মরে যায়—
পোস্টারের নিচে,
প্রচারাভিযানের ভেতর,
অন্ধ বিশ্বাসের কোলাহলে।
আমি যেতে চাই দূর কোনো নীল গ্রহে—
যেখানে বাতাসে নেই কার্বনের বিষ,
শুধু তারার ধূলি
আর অরোরার মৃদু নাচ।
যেখানে শব্দ মানে সঙ্গীত,
আর নীরবতা মানে প্রার্থনা।
সেখানে বন্দুক নেই,
নেই যুদ্ধের নেশা—
মানুষ নেই, তবু আছে জীবনের আলো।
আমি সাজাবো এক স্বপ্নের সাম্রাজ্য—
জনহীন — তবু অদৃশ্য প্রাণের গুঞ্জনে পূর্ণ।
আলোয় গড়া ঘর বানাবো অন্ধকারের বুকের ওপর,
যেখানে সময় থেমে যাবে
আমার ইচ্ছেমতো।
ফুল ফুটবে বিনা মাটিতে,
আর নদী বইবে আকাশের বুকের ভেতর দিয়ে—
যেন মহাবিশ্ব নিজেই
আমার সুরে শ্বাস নিচ্ছে।
সেখানে কোনো পতাকা থাকবে না,
না কোনো ধর্ম,
না কোনো সীমান্তরেখা—
শুধু এক অসীম আলোর সমুদ্র,
যেখানে আমি হারাবো,
আবার নিজেকেই খুঁজে পাবো।
আমি হবো এক ভাসমান ধূলিকণা—
তবু তারার মতো জ্বলে উঠব প্রতিরাতে।
পৃথিবী, বিদায়।
তোমার কোলাহল এখন আমার কাছে
প্রতিধ্বনির দুঃস্বপ্ন।
তোমার সভ্যতা এক আয়না—
যেখানে মানুষ নিজের ছায়াকেও অপরাধী জেনে নেয়।
আমি পাড়ি দিচ্ছি এমন এক গ্রহে—
যেখানে প্রতিটি নিঃশ্বাস মানে কবিতা,
প্রতিটি নিঃসঙ্গতা মানে শান্তি,
আর প্রতিটি আলো মানে পুনর্জন্ম।
৩১/১০/২০২৫ খ্রিঃ।