
প্রদীপ চন্দ্র মম
যে আগুন একদিন হ্যানয়ের অরণ্যে জেগে উঠেছিল—
তার শিখা ছড়িয়ে পড়েছিল হাভানার গলিতেও,
যেখানে চে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন,
“বিপ্লব মানে প্রেম, আর প্রেম মানে ত্যাগ।”
সে প্রেম কোনো বিলাস নয়,
রাজপ্রাসাদের রেশম-বিছানায় নয় তার আশ্রয়;
সে লুকিয়ে থাকে ধূলিমাখা পায়ের নিচে,
ক্ষুধার্ত চোখের গভীরে,
রক্তরাঙা মাটির গন্ধে।
লেলিন একদিন লিখেছিলেন—
“বিপ্লবীর শক্তি জনগণের চেতনায়,”
না তেলের গন্ধে ভেজা হাতে,
না সোনার ঘড়িতে মাপা কপট হাসিতে।
ভিয়েতনামের পাহাড়ে,
জঙ্গলের পাতায় ঢাকা ঘুমে একদিন
জেনারেল জিয়াপ দেখেছিলেন মুক্ত আকাশের স্বপ্ন—
সেই স্বপ্নের প্রহরায় ছিল বিবেক,
বিলাস নয়।
বিপ্লব তখনই সত্য,
যখন নেতা থাকে ক্ষুধার পাশে,
যখন রুটি ভাগ হয়, সিগার নয়,
যখন নীতি হাঁটে সামনের সারিতে,
আর বিলাস সরে যায় পরাজিত সৈন্যের মতো নীরবে।
চে বলেছিলেন—
“ক্ষমতার লোভে জন্ম নেওয়া লড়াই শেষ হয় রক্তে নয়, লজ্জায়।”
আর লেলিন শিখিয়েছিলেন—
“জনগণকে ভুলে গেলে বিপ্লব মরে যায়, অহংকারের আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যায়।”
তাই আজও যারা নিজেদের বিপ্লবী বলে,
তাদের মনে রাখা উচিত—
বিপ্লব কখনও জন্মায় না প্রাসাদে,
সে জন্মায় কুঁড়েঘরে,
যেখানে শিশুর কান্না মিশে যায় শপথে—
“আমি বিক্রি হব না, আমি বদলাব না।”
একজন সত্য বিপ্লবী হয়তো ধনে গরিব,
কিন্তু বিবেকে ধনী;
সে-ই লেলিনের উত্তরসূরি,
সে-ই চে’র অবিনাশী ছায়া,
যে এখনো দাঁড়িয়ে আছে ইতিহাসের প্রান্তে,
মৃদু স্বরে বলে যায়—
“বিপ্লব ও বিলাস এক পথে চলে না।”
২৩/১০/২০২৫ খ্রিঃ।