প্রদীপ চন্দ্র মম
মাটি ও মেয়ে:
দুজনেই জন্ম দেয় ঘ্রাণের, জীবনের, বিস্ময়ের ছোঁয়া;
তুমিও ফুটিয়েছ হৃৎকমলের গোপন পাপড়ি,
যার রসে ধানভরা মাঠে জেগে ওঠে নিঃশব্দ প্রেম।
আমি কৃষকের মতো—
অন্তর্গত আলপথে হেঁটে যাই সরিষার গন্ধ মেখে,
মটরশুঁটির কোমল সবুজে জাগে তোমার ছায়া;
দূরে নদী গায় স্রোতের গান,
ঝর্ণা নামে কাঁপা কণ্ঠে— যেন তোমার নিঃশ্বাস।
মেঠোপথের ধুলোয় জেগে ওঠে সন্ধ্যার শালিক,
সাগরের ঢেউয়ে শুনি তোমার হৃদয়ের অব্যক্ত ডাক;
মহাসাগরের গভীরে নেমে দেখি—
মানবের একাকিত্বে তুমি যেন আলোহীন মুক্তা।
পাহাড়-পর্বতের বুক ফুঁড়ে ওঠে বৃষ্টির ভাষা,
মালভূমির গানে তোমার নাম ঝরে যায় বাতাসে;
মরুভূমির বালিতে রেখে যায় পদচিহ্ন—
চিরকালের পিপাসার অনন্ত প্রতীক।
সবুজের মাঝে পাখির কলতান গায় আমার ব্যথার সুর,
উত্তর মেরুর বরফে দেখি তোমার চোখের স্থিরতা;
দক্ষিণ মেরুর একাকী আলোয় তুমি নীরব প্রতিমা—
সুমেরু কুমেরুর দূরান্ত রেখা ধরে
তোমার জন্যই আমি হেঁটে যাই, হেঁটে যাই অবিরাম।
মানস সরোবরের নীরব জলে একদিন হয়তো
তোমার প্রতিবিম্ব জেগে উঠবে—
তখন বুঝি,
মানুষের দেয়া ভালোবাসা ফেলে
আমি আসলে কখনও একা হইনি।
২২/১০/২০২৫ খ্রিঃ।