প্রদীপ চন্দ্র মম
তুমি বুঝো না, নাকি বুঝে না বোঝার ভান করো?
আমি যেমন তোমার প্রেমের ভাষা পড়তে পারিনি,
তেমনি তুমি পড়োনি আমার নীরবতার উচ্চারণ।
তবু মনে হয়—বহু জনম আগে
তুমি ছিলে আমার কামনার জোৎস্না,
আমার মাটির ভেতরে গেঁথে থাকা বীজের অজানা আলো।
আমরা একসাথে সাজাতাম প্রকৃতিকে—
নদীর গন্ধ, পাতার নিঃশ্বাস, আর কাকের উড়ে যাওয়া বিকেল।
বিধাতা তখন হাসতেন মিটমিট করে,
বলতেন, “এই তো সৃষ্টি—
দুই আত্মার মিশ্রণে গড়া এক অনন্ত ঋতু।”
কিন্তু এ জনমে আমরা দুই ভিন্ন পৃথিবীর বাসিন্দা—
তোমার আকাশে নক্ষত্র জ্বলে, আমার আকাশে মেঘের ছায়া দোলে।
প্রকৃতি এখন আর আমাকে বিশ্বাস করে না;
তার চোখে আমি এক অবিশ্বাসী প্রেমিক,
যে হারিয়েছে নিজের মৌসুম।
অগ্নেয়গিরির জ্বালায় সে কাঁপে,
পাহাড়ের বুকে ক্ষোভ জমে—
ষড়ঋতুর রূপ ম্লান হয়ে যায়,
দুই ঋতুর ক্লান্ত নিশ্বাসে হায়।
সবুজ হারায় দিগন্তে,
পাখিরা গায় অভিমানের গান।
হায়, আমি আর আমার জনম-জনমের প্রেম—
অস্তিত্বহীন, অথচ ছায়ার মতো সত্য,
যে প্রেমে জীবনানন্দের নিসর্গ মিশে আছে,
আর যার প্রতিধ্বনি শোনা যায়
নদীর তলদেশে, বাতাসের দোলায়,
এক হারানো আত্মার নিশীথ নিঃশ্বাসে।
১৭/১০/২০২৫ খ্রিঃ।