নিজস্ব প্রতিবেদক
বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট এক গভীর অনিশ্চয়তার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। একদিকে ক্ষমতা ধরে রাখার প্রবল প্রতিযোগিতা, অন্যদিকে বিরোধী পক্ষের শক্তি প্রমাণের চেষ্টা—এই দ্বন্দ্বই দেশের সাধারণ মানুষের জীবনকে বিপর্যস্ত করে তুলছে। রাজনীতির স্বাভাবিক গতিধারার জায়গায় এসেছে উত্তেজনা, সহিংসতা আর প্রতিহিংসার সংস্কৃতি। এমন এক পরিস্থিতিতে সংযমের অভাব যদি চলতেই থাকে, তবে দেশের ভবিষ্যৎ সত্যিই অন্ধকার হতে বাধ্য।
সংযম মানে কেবল ভাষায় মার্জিত হওয়া নয়; সিদ্ধান্তে, কর্মে ও রাজনৈতিক কৌশল প্রণয়নে ভারসাম্য রক্ষা করাও এর অংশ। রাজনৈতিক নেতারা যদি প্রতিনিয়ত হুমকি-ধমকি, আক্রমণাত্মক বক্তব্য আর হিংসাত্মক কর্মসূচিকে সামনে রাখেন, তবে জনগণের কাছে তাদের আস্থা ক্রমশ ক্ষয়ে যায়। রাজনীতিকে যারা ভবিষ্যতের সেতু বানানোর পরিবর্তে ক্ষমতা দখলের হাতিয়ার বানান, তারা মূলত দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন ও গণতন্ত্রকেই বিপন্ন করেন।
আজকের বাংলাদেশে দেখা যাচ্ছে, ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী তাদের প্রভাব ধরে রাখতে সব ধরনের কৌশল অবলম্বন করছে, অন্যদিকে বিরোধী শিবির আন্দোলনের নামে সহিংসতা থেকে শুরু করে অস্থিরতা তৈরিতে মনোযোগী। দুই পক্ষের এই অসংযত প্রতিদ্বন্দ্বিতা মূলত দেশের জনগণকে জিম্মি করে রেখেছে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি কিংবা অর্থনীতির বাস্তব সংকটগুলো এভাবে আড়ালে পড়ে যাচ্ছে।
একটি রাষ্ট্র টিকে থাকে আইনের শাসন, সুশাসন, এবং জনগণের আস্থার উপর। কিন্তু সংযমহীন ক্ষমতার দ্বন্দ্বে আইনের শাসন দুর্বল হয়, সুশাসন ভেঙে পড়ে, আর জনগণের আস্থা হারিয়ে যায়। যখন জনগণের আস্থা হারিয়ে যায়, তখন রাষ্ট্রের ভিত্তি নড়বড়ে হয়ে পড়ে। ইতিহাস প্রমাণ করেছে, যে কোনো দেশে দীর্ঘস্থায়ী রাজনৈতিক সংকট ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে অন্ধকারে ঠেলে দেয়।
অতএব, এখনই প্রয়োজন রাজনীতিতে সংযম ফিরিয়ে আনা। রাজনৈতিক মতবিরোধ থাকবেই, কিন্তু তার প্রকাশ ঘটাতে হবে গণতান্ত্রিক শৃঙ্খলার ভেতরে। একে অপরকে ধ্বংস করার মানসিকতা থেকে বের হয়ে আসতে না পারলে আজকের তরুণ প্রজন্ম একটি অন্ধকার ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যাবে। আর সেই অন্ধকার কেবল রাজনীতি নয়, সমাজ, সংস্কৃতি ও অর্থনীতির প্রতিটি স্তরে বিষ ছড়িয়ে দেবে।
সংযমই আজকের রাজনীতির সবচেয়ে বড় চাহিদা। এই সংযমই নির্ধারণ করবে—বাংলাদেশ একটি সম্ভাবনার দেশ হয়ে উঠবে, নাকি অস্থিরতার ঘূর্ণিপাকে হারিয়ে যাবে।
-আল আমিন মিলু
আহ্বায়ক
গনঅধিকার পরিষদ
সরিষাবাড়ি উপজেলা শাখা
জামালপুর