নাজমুল হাসান রাজ সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি:
'সিরাজগঞ্জে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে বেড়া দিয়ে একটি পরিবারকে অবরুদ্ধ, মানবেতর জীবনযাপন: প্রশাসন নিরব' শিরোনামে "দ্য পিপলস নিউজ ২৪.কমে" সংবাদ প্রকাশের পর পদক্ষেপ নিয়েছেন উপজেলা প্রশাসন।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মনোয়ার হোসেন পুলিশ প্রশাসন সাথে করে নিয়ে গোবিন্দপোটল গ্রামে গিয়ে বেড়া অপসারন করে দিয়ে অবরুদ্ধ ভুক্তভোগী পরিবারটি অবমুক্ত করে দেন। এসময় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোখলেসুর রহমান ও উপ-পরিদর্শক মানিকসহ পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ায় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন পরিবারের সকল সদস্যগন।
হাবিবর রহমানের ছেলে মিলনসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা জানান, রান্না করার জায়গা পর্যন্ত দখল করে নিয়েছিল। চাল-ডাউলের ঘর তালাবদ্ধ করে রেখেছিল। প্রায় ৭দিন যাবত বাড়ীতে রান্না করতে পারছিলাম না। দোকান থেকে কলা-রুটি কিনে নিয়ে পরিবারের সদস্যদের নিয়ো মানবেতর জীবন যাপন করছিলাম। এলাকার কেউ পাশে দাঁড়ায়নি। এ অবস্থায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে সদর উপজেলা নির্বাহী মো. মনোয়ার হোসেন ও সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোখলেসুর রহমানসহ পুলিশ সদস্যদের নিয়ে গিয়ে বেড়া খুলে দিয়ে আমাদের অবমুক্ত করে দিয়েছেন। আমরা
ভুক্তভোগী পরিবার উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মনোয়ার হোসেন জানান, পুলিশ সদস্যেদের সঙ্গে নিয়ে বেড়া খুলে দিয়ে ভুক্তভোগী পরিবারটি অবমুক্ত করে দেয়া হয়েছে। উভয়পক্ষকে শান্ত থাকার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। একই সাথে আগামীতে দুইপক্ষের কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে আইনগতভাবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলে দুপক্ষকে অবগত করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ১৯৯৩ সালে একই গ্রামের রমজান আলীর ছেলে আবদুর রহমানের ৭৭০ দাগের ১৩ ডেসিমাল, রমজান আলীর আরেক ছেলে ছফর আলী মাস্টারের কাছ থেকে ৭৭৯ দাগের ৬.২৫ শতাংশ জায়গা দলিলমূলে ক্রয় করেন। ১৯৯৬ সালে রমজান আলীর ছেলে ছফর আলী মাস্টারের কাছ থেকে ৭৭১ দাগের ২৩ কাতে দক্ষিন অংশ হতে ১২ শতাংশ জমি দলিলমুলে ক্রয় করেন। ১৯৯৬ সালে মোট ৩১ ডেসিমাল জায়গার উপর বসতভিটা ও বাগান গড়ে তুলে বসবাস শুরু করেন। দীর্ঘ প্রায় ৩০ বছর পর রমজান আলীর আরেক ছেলে আব্দুল কাদেরের ছেলে তারেক রহমান জমির ক্রেতা হবিবুর রহমানের জায়গা থেকে ২৩ শতাংশ জমি দাবী করেন। এনিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে দ্বন্ধ চলছিল। এ অবস্থায় গত বৃহস্পতিবার তারেক রহমান ফজরের নামাজ পর শতাধিক বড়বড় রামদাসহ দেশীয় অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী ও চরের জলদস্যু নিয়ে হাবিবর রহমানের জায়গায় বেড়া দিয়ে অবরুদ্ধ ও ঘর তুলে দখল করে নেয়। এতে করে হাবিবরের বাড়ী সম্পূর্ন অবরুদ্ধ হয়ে যায়। বাড়ী থেকে কেউ বের হতে পারেনি আবার কেউ ঢুকতে পারেনি। এ নিয়ে "দ্য পিপলস নিউজ২৪ ডটকমে" সংবাদ প্রকাশ হলে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নজরে আসেন।