
নিজস্ব প্রতিবেদক
আজকের রাজনীতির বড় সংকট হলো – আদর্শের অভাব। রাজনীতির মাঠে যত বেশি মানুষের ভিড়, যত বড় শোডাউন, যত দৃষ্টিনন্দন মিছিল-মিটিং – সবকিছুই যেন রাজনীতির শক্তিমত্তার মাপকাঠি হয়ে দাঁড়িয়েছে। অথচ দল ভারি করার জন্য মানুষ জড়ো করা যায়, কিন্তু তাদের দিয়ে ভালো রাজনীতি প্রতিষ্ঠা করা যায় না।
রাজনীতির মূল শক্তি হচ্ছে আদর্শ। আদর্শের ভিত্তিতে যে রাজনীতি দাঁড়ায়, সেখানে মানুষের স্বপ্ন, আশা-আকাঙ্ক্ষা, ত্যাগ আর বিশ্বাস মিশে থাকে। কিন্তু যখন সেই জায়গায় অর্থ, স্বার্থ আর প্রভাবশালী হওয়ার লোভ প্রবেশ করে, তখন রাজনীতি তার প্রাণ হারায়। তখন মানুষ দল করে শুধু ক্ষমতার ভাগ পাওয়ার জন্য, কিন্তু দেশের জন্য, মানুষের জন্য নয়।
আদর্শহীন লোক দিয়ে দল ভারি করলে কী হয়?
১. সিদ্ধান্তহীনতা তৈরি হয় – কারণ তারা জানে না কোন নীতি মেনে চলবে।
২. দল হয় দিশেহারা – আদর্শ না থাকলে দলে ত্যাগী কর্মীর পরিবর্তে ভিড় জমে সুবিধাভোগীদের।
৩. দুর্নীতি আর সুযোগসন্ধানিতা বেড়ে যায় – যারা নীতি ছাড়া আসে, তারা সুযোগ পেলেই ব্যক্তিস্বার্থকে এগিয়ে নেয়।
৪. জনগণের আস্থা হারায় – জনগণ টের পায়, এখানে নীতি নেই, আছে শুধু ভণ্ডামি।
বাংলাদেশসহ তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোতে এই চিত্র খুবই প্রকট। বড় বড় রাজনৈতিক দলগুলো আজ প্রতিযোগিতা করছে কত জনকে টানতে পারলো, কিন্তু প্রতিযোগিতা করছে না আদর্শ ও নীতিতে কে এগিয়ে আছে। ফলাফল – রাজনীতি রূপ নিচ্ছে শুধু ক্ষমতার লড়াইয়ে, আর জনগণের স্বপ্ন আটকে যাচ্ছে সেই শূন্যতার মাঝে।
সত্যিকার অর্থে ভালো রাজনীতি প্রতিষ্ঠা করতে হলে দরকার সৎ, ত্যাগী ও আদর্শবান মানুষ। যারা স্বার্থ নয়, দেশকে এগিয়ে নেওয়ার কথা চিন্তা করবে। ইতিহাস সাক্ষী, বাংলার স্বাধীনতা, গণতন্ত্র, ভাষার অধিকার – সবকিছুর পেছনে ছিল আদর্শবান মানুষের ত্যাগ। তারা সংখ্যায় কম ছিলেন, কিন্তু মানসিকতায় ছিলেন বিশাল।
তাই সময় এসেছে নতুন করে ভাববার। দল ভারি নয়, দলকে গড়তে হবে আদর্শ দিয়ে।
কারণ— আদর্শহীন লোকজন দিয়ে ভিড় বাড়ানো যায়, কিন্তু কোনোদিন ন্যায়ের রাজনীতি প্রতিষ্ঠা করা যায় না।
-আল আমিন মিলু
আহ্বায়ক
গনঅধিকার পরিষদ
সরিষাবাড়ি উপজেলা শাখা
জামালপুর