নিজস্ব প্রতিবেদক
দেশ পরিচালনার দুইটি মূল স্তম্ভ হলো রাজনীতি ও প্রশাসন। রাজনীতিবিদরা যদি দেশকে সঠিক পথে পরিচালনা করার দায়িত্ব পালন না করেন, যদি তারা দুর্নীতিগ্রস্ত বা স্বার্থান্বেষী হয়ে ওঠেন, তবে প্রশাসন নামক আমলাতান্ত্রিক শক্তি অকারণে প্রভাবশালী হয়ে ওঠে। ইতিহাস সাক্ষী, যে দেশে রাজনৈতিক নেতৃত্ব দুর্বল হয়, সে দেশে আমলারা ক্ষমতার শূন্যতা পূরণ করে নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির হাতিয়ার বানায় রাষ্ট্রযন্ত্রকে।
আমলারা মূলত রাষ্ট্র পরিচালনার চাকুরে শ্রেণি। তাদের দায়িত্ব হলো সরকারের নীতি বাস্তবায়ন করা। কিন্তু রাজনীতিবিদরা যদি সৎ, দূরদর্শী ও দেশপ্রেমিক না হন, তবে তারা প্রশাসনের ওপর কোনো নৈতিক নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারেন না। তখন প্রশাসন নিজেরাই হয়ে ওঠে নীতি নির্ধারক, আবার একই সঙ্গে দুর্নীতির মূল চালিকাশক্তি। ফলাফল হয়—দলিলপত্রে উন্নয়ন, মাঠে কেবল লুটপাট।
বাংলাদেশসহ উপমহাদেশের অনেক দেশে দেখা যায়, দুর্বল রাজনৈতিক নেতৃত্বের সুযোগে আমলারা রাষ্ট্রের অর্থনীতি থেকে বিচারব্যবস্থা, প্রকল্প থেকে চাকরি—সব জায়গায় এক প্রকার “সুপার পাওয়ার” হয়ে ওঠে। তারা আইনের আড়ালে থেকে জনগণের সম্পদ নিজেদের সম্পদে রূপান্তরিত করে। অথচ জনগণের ভোটে নির্বাচিত রাজনৈতিক নেতৃত্ব যদি শক্তিশালী হয়, তবে আমলাদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত হয়, প্রশাসন জনগণের সেবক হয়ে কাজ করে।
আজ আমাদের দেশে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হলো—আমরা কী ধরনের রাজনীতি চাই? যদি রাজনীতি দুর্বল হয়, আদর্শহীন হয়, তবে দেশের প্রশাসনিক শক্তি কখনোই জনগণের বন্ধু হবে না। বরং তারা লুটপাট, ঘুষ, অনিয়মকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেবে। তাই প্রশাসনকে সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হলে প্রথম শর্ত হলো—যোগ্য, সৎ এবং দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক নেতৃত্ব।
দেশকে বাঁচাতে হলে রাজনীতিবিদদেরকেই নিজেদের চরিত্রবান, আদর্শবান ও জনগণকেন্দ্রিক হতে হবে। কারণ রাজনীতিবিদরা যদি ব্যর্থ হন, তাহলে আমলাতন্ত্র পুরো রাষ্ট্রকে কব্জা করবে, আর জনগণের ভাগ্যে জুটবে শুধু শোষণ আর বঞ্চনা।
-আল আমিন মিলু
আহ্বায়ক
গনঅধিকার পরিষদ
সরিষাবাড়ি উপজেলা শাখা
জামালপুর