নিজস্ব প্রতিবেদক
বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় অভিশাপ হলো দুর্নীতি। রাজনীতিবিদ থেকে শুরু করে আমলা—যাদের হাতে রাষ্ট্রের হাল ধরা, তারা কেউই চায় না দেশ দুর্নীতি মুক্ত হোক। কারণ দুর্নীতি এখন কেবল একটি অসুস্থ অভ্যাস নয়, বরং এটি ক্ষমতা ও সুবিধা ভোগের সবচেয়ে সহজ পথ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
আমাদের রাজনীতিবিদরা দুর্নীতিকে হাতিয়ার বানিয়ে জনগণের সম্পদ লুটে নেয়, ক্ষমতার সিঁড়ি বেয়ে ওপরে উঠে। তাদের কাছে রাষ্ট্র মানে ব্যক্তিগত আখের গোছানো। অন্যদিকে আমলারা মনে করেন, এই রাষ্ট্র তাদের চাকরি, তাদের বংশানুক্রমিক ক্ষমতার ঘর। ফলে নীতি-নৈতিকতা, সততা কিংবা জবাবদিহিতা শব্দগুলো তাদের অভিধান থেকে হারিয়ে গেছে।
সবচেয়ে বড় দুঃখের বিষয় হলো, যারা পরিবর্তন আনার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় আসে, তারাই কিছুদিন পর একই চক্রে ঢুকে যায়। কারণ এই সিস্টেমই দুর্নীতিকে বাঁচিয়ে রাখে। সৎ মানুষ এখানে টিকে থাকতে পারে না—যাকে আমরা বারবার প্রত্যক্ষ করেছি। ফলে যে গাছের শিকড়েই পচন ধরেছে, সে গাছ থেকে সুস্থ ফল আসবে কিভাবে?
কেউ সৎ হতে চায় না, কারণ সততা এখন আর লাভজনক নয়। সততার বিনিময়ে সম্মান, নিরাপত্তা বা সামাজিক স্বীকৃতি পাওয়া যায় না। বরং অসৎ হলে টাকা, ক্ষমতা, প্রভাব, বিলাসবহুল জীবন—সব কিছু হাতের মুঠোয় চলে আসে। এই বিকৃত সংস্কৃতি আমাদের সমাজকে গ্রাস করেছে।
কিন্তু মনে রাখতে হবে, যতদিন পর্যন্ত রাজনীতিবিদ ও আমলার এই অশুভ আঁতাত ভাঙা না যায়, ততদিন পর্যন্ত দুর্নীতি দূর হবে না। আমাদের রাষ্ট্রযন্ত্র হবে অকার্যকর, বিচারব্যবস্থা থাকবে বিকল, আর সাধারণ মানুষ ভুগবে অবিচার ও অবহেলায়।
আজ প্রয়োজন রাজনৈতিক সংস্কৃতি পরিবর্তনের। এমন একটি সিস্টেম যেখানে দুর্নীতি করলে শাস্তি হবে, আর সৎ হলে সম্মান ও নিরাপত্তা পাওয়া যাবে। জনগণের দায়িত্বও কম নয়—তারা যদি দুর্নীতিবাজকে ভোট দেয়, তার কাছে মাথা নোয়ায়, তাহলে দুর্নীতি রুখবে কে?
অতএব, বাংলাদেশকে সত্যিকার অর্থে দুর্নীতি মুক্ত করতে হলে আমাদের রাজনীতি ও প্রশাসনের কাঠামো ভাঙতে হবে, নতুন করে গড়তে হবে। তা না হলে প্রজন্মের পর প্রজন্ম আমরা একই দুঃস্বপ্নের ভেতর ঘুরপাক খেয়ে যাব।
-আল আমিন মিলু
আহ্বায়ক
গনঅধিকার পরিষদ
সরিষাবাড়ি উপজেলা শাখা
জামালপুর