নিজস্ব প্রতিবেদক
বাংলাদেশের ইতিহাসে ফ্যাসিবাদের আগ্রাসন নতুন নয়। বরং এই ভূখণ্ড বারবার দেখেছে কিভাবে ক্ষমতার লোভে, একদলীয় আধিপত্যে এবং রাষ্ট্রযন্ত্রের ভয়ঙ্কর ব্যবহার করে জনগণের মৌলিক অধিকার হরণ করা হয়েছে। স্বাধীনতার পূর্বে পাকিস্তানি সামরিক জান্তার দমন-পীড়ন ছিল নিছক স্বৈরতন্ত্র নয়, সেটি ছিল ফ্যাসিবাদী মনোভাবের প্রতিচ্ছবি। তখন গণআন্দোলনের কণ্ঠরোধ, রাজনৈতিক কর্মীদের উপর হত্যা-গুম-নির্যাতন এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় রুদ্ধশ্বাস পরিবেশ—এসবই ছিল ফ্যাসিবাদের চিহ্ন।
স্বাধীনতার পরও কি আমরা মুক্ত থাকতে পেরেছি? দুঃখজনকভাবে উত্তর হচ্ছে—না। স্বাধীনতার পর যখন একদলীয় শাসন কায়েম করা হলো, তখনও বিরোধী কণ্ঠস্বরকে রক্ত দিয়ে স্তব্ধ করার চেষ্টা হয়েছিল। ৮০’র দশকে সামরিক স্বৈরশাসনও একই ধারার পুনরাবৃত্তি। গণতন্ত্রকে পায়ে দলে দিয়ে জনগণকে দমিয়ে রাখার অপচেষ্টা চলেছে বারবার। প্রতিবারই বাংলাদেশের মানুষ রক্ত দিয়ে, আন্দোলনের ঝড় তুলে ফ্যাসিবাদের শৃঙ্খল ভেঙেছে।
আজকের দিনে এসে আবারও প্রশ্ন উঠছে—আমরা কি নতুন কোনো ফ্যাসিবাদের মুখোমুখি? রাষ্ট্রযন্ত্রের অপব্যবহার, ভিন্নমতের মানুষকে দমন, গুম-খুন, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা, ভোটাধিকার হরণ—এসব কি ফ্যাসিবাদের বৈশিষ্ট্য নয়? ইতিহাস আমাদের সতর্ক করছে যে, ফ্যাসিবাদের মুখোশ বারবার বদলায়, কিন্তু চরিত্র একই থাকে।
জনগণকে তাই এখনই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। ইতিহাস বারবার শেখায়, অন্যায় ও ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে জনগণই শেষ আশ্রয়। যদি মানুষ ভুলে যায় আগের শাসনগুলোর ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা, তবে আবারও তারা একই শৃঙ্খলে বন্দি হবে। আর যদি জনগণ সচেতন হয়, ভোটের মাঠে অধিকার প্রয়োগ করে, স্বাধীন কণ্ঠ রক্ষায় ঐক্যবদ্ধ হয়, তবে ফ্যাসিবাদের আগ্রাসন চিরতরে পরাজিত হবে।
বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে জনগণের হাতে—তারা কি আবারো নীরব দর্শক হয়ে থাকবে, নাকি ইতিহাসের শিক্ষা নিয়ে সতর্ক সিদ্ধান্ত নেবে?
-আল আমিন মিলু
আহ্বায়ক
গনঅধিকার পরিষদ
সরিষাবাড়ি উপজেলা শাখা
জামালপুর