নিজস্ব প্রতিবেদক
আমাদের রাজনীতির মূল স্রোত দীর্ঘদিন ধরে নেতা কেন্দ্রিক হয়ে পড়েছে। নেতা বড়, দলের ভাবমূর্তি বড়—কিন্তু জনগণ কোথায়? সাধারণ মানুষের প্রয়োজন, সমস্যা, বঞ্চনা, সুযোগ-সুবিধার প্রশ্নগুলো অনেক সময়ই রাজনৈতিক আলোচনার বাইরে থেকে যায়। ফলে রাজনীতি হয়ে ওঠে ব্যক্তিপূজার আসর, আর জনস্বার্থ চাপা পড়ে ব্যক্তিগত স্বার্থের আড়ালে।
একটি স্থিতিশীল ও উন্নত রাষ্ট্র গঠনের জন্য জনবান্ধব রাজনীতি অপরিহার্য। জনবান্ধব রাজনীতি মানে হলো এমন এক রাজনৈতিক সংস্কৃতি, যেখানে নেতা নয়—জনগণই সব সিদ্ধান্তের কেন্দ্রবিন্দু। এখানে ভোট শুধু ক্ষমতার সিঁড়ি নয়, বরং জনগণের আস্থা ও প্রত্যাশার প্রতিফলন।
সৎ নেতৃত্বের প্রয়োজন অস্বীকার করার সুযোগ নেই। কিন্তু সৎ নেতৃত্ব থাকলেই দেশ সংস্কার হবে—এ ধারণা পূর্ণ সত্য নয়। নেতৃত্ব যদি জনস্বার্থে নিবেদিত না হয়, জনগণের সঙ্গে সংযোগ না রাখে, তাহলে সততা কাগজে-কলমে সীমাবদ্ধ থেকে যায়। তাই সততার পাশাপাশি দরকার দক্ষতা, দূরদর্শিতা, এবং সবচেয়ে বড় কথা—জনকল্যাণকে অগ্রাধিকার দেওয়ার মানসিকতা।
জনবান্ধব রাজনীতি গড়ে তুলতে হলে তিনটি বিষয় জরুরি—
১. জনগণের সরাসরি অংশগ্রহণ: সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় জনগণের মতামতকে গুরুত্ব দিতে হবে।
২. স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি: রাজনীতিবিদদের কাজের জন্য সরাসরি জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে হবে।
৩. অর্থনৈতিক ও সামাজিক সমতা: উন্নয়নের সুফল যেন কেবল এক শ্রেণির কাছে সীমাবদ্ধ না থাকে।
রাজনীতি যদি মানুষের জন্য না হয়, তবে সেই রাজনীতি কেবল ক্ষমতার খেলায় পরিণত হয়। ক্ষমতার খেলা হয়তো কিছু নেতাকে সুবিধা দেয়, কিন্তু দেশকে অস্থিতিশীল করে তোলে। তাই আজ প্রয়োজন জনবান্ধব রাজনীতি—যেখানে ক্ষমতার কেন্দ্রে থাকবে না ব্যক্তি বা দল, থাকবে জনগণ।
জনগণই যদি হয় রাজনীতির প্রকৃত মালিক, তাহলে দেশের স্থিতিশীলতা ও উন্নতি দুই-ই নিশ্চিত হবে। সৎ, দক্ষ ও জনবান্ধব রাজনীতিই পারে নতুন বাংলাদেশের ভিত্তি গড়তে।
-আল আমিন মিলু
আহ্বায়ক
গনঅধিকার পরিষদ সরিষাবাড়ি উপজেলা