নিজস্ব প্রতিবেদক
বাংলাদেশের রাজনীতিতে ক্রমেই এক অশুভ প্রবণতা বিস্তার লাভ করছে—পছন্দের দলে যোগ না দিলে, কিংবা দলীয় মিছিল, সমাবেশ ও সভায় অংশ না নিলে সাধারণ মানুষকে হুমকি-ধমকি দেওয়া। কখনো তা মৌখিক, কখনো সামাজিকভাবে চাপ প্রয়োগ, এমনকি শারীরিক আক্রমণ পর্যন্ত গড়ায়। এই প্রবণতা শুধু রাজনৈতিক শিষ্টাচারের অবক্ষয় নয়, বরং গণতন্ত্রের মৌলিক ভিত্তির ওপর সরাসরি আঘাত।
গণতন্ত্রের মূল চেতনা হলো মত প্রকাশের স্বাধীনতা, ভিন্নমতের প্রতি সহনশীলতা এবং জনগণের রাজনৈতিক অংশগ্রহণের অধিকার। কিন্তু বাস্তব চিত্র ভিন্ন—এখানে ভিন্নমত মানেই প্রতিপক্ষ, আর প্রতিপক্ষ মানেই দমন-পীড়নের লক্ষ্য। এর ফলে সাধারণ মানুষের মধ্যে রাজনীতি নিয়ে অনীহা বাড়ছে, তরুণ প্রজন্ম রাজনীতিকে ঘৃণার চোখে দেখছে, আর রাজনীতির মঞ্চে উঠে আসছে কেবল প্রভাবশালী ও বলপ্রয়োগকারী গোষ্ঠী।
কেন এই সংস্কৃতি বিপজ্জনক?
প্রথমত, এটি নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকার হরণ করে। দ্বিতীয়ত, রাজনৈতিক সহিংসতা ও প্রতিশোধপরায়ণতার চক্র অব্যাহত রাখে। তৃতীয়ত, জনগণের রাজনৈতিক আস্থার জায়গা ভেঙে দেয়, যা দীর্ঘমেয়াদে রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়ায়।
সমাধান ও করণীয়
রাজনৈতিক দলগুলোর অভ্যন্তরীণ সংস্কার জরুরি। ভিন্নমত দমন নয়, বরং আলোচনা ও সংলাপের মাধ্যমে সমাধান নিশ্চিত করতে হবে।
আইন প্রয়োগকারী সংস্থার নিরপেক্ষ ভূমিকা নিশ্চিত করতে হবে, যাতে রাজনৈতিক পরিচয় নির্বিশেষে হুমকি ও সহিংসতায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
জনগণকেও সচেতন হতে হবে—হুমকি-ধমকি দেওয়া রাজনীতিবিদদের সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে বর্জন করতে হবে।
বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে এই অরাজনৈতিক সংস্কৃতি থেকে মুক্তির ওপর। আমাদের গণতন্ত্রকে টিকিয়ে রাখতে হলে সহনশীলতা, ভিন্নমতের প্রতি শ্রদ্ধা এবং রাজনৈতিক শিষ্টাচার ফিরিয়ে আনতে হবে। রাজনীতি হতে হবে সেবার মাধ্যম, ভয় প্রদর্শনের হাতিয়ার নয়।
-আহবায়ক
গনঅধিকার পরিষদ সরিষাবাড়ি উপজেলা শাখা জামালপুর