নিজস্ব প্রতিবেদক
বাংলা ক্যালেন্ডারের পাতায় জুলাই ও আগস্ট যেন রক্তে লেখা দুটি অধ্যায়। এই মাসগুলোর সঙ্গে জড়িয়ে আছে আমাদের জাতির আত্মত্যাগ, আন্দোলন, প্রতিরোধ আর আশার এক দীর্ঘ ইতিহাস। কখনও এসব দিন বয়ে এনেছে অশ্রু আর আর্তনাদ, কখনও আবার শানিত করেছে আমাদের সংগ্রামের ধারালো অস্ত্র।
১. রক্তাক্ত জুলাই
জুলাই মানেই স্মরণ করিয়ে দেয় অন্ধকারের অমানিশা। এই মাসেই আমরা দেখেছি স্বৈরাচারী শাসনের নির্মম থাবা। বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড, গুম, দমন-পীড়ন — সবকিছু যেন জুলাই মাসে ঘনীভূত হয়। বিশেষ করে ১৯৭৫ সালের জুলাই থেকে আগস্ট — এ সময়ের প্রতিটি দিন ছিল অনিশ্চয়তা ও আতঙ্কে ভরা।
রাজনীতিতে যারা ভিন্নমত পোষণ করেছে, তাদের জন্য এই মাস অনেক সময়ই রক্তের বিনিময়ে স্বাধীন মতপ্রকাশের ইতিহাস রচনা করেছে। আজও এই সময়টায় অনেক রাজনৈতিক সংগঠন তাদের শহীদদের স্মরণ করে, বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে।
২. আগস্টের কালো ছায়া
আগস্ট বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বেদনার মাস। ২০২৪ এর জুলাই/আগষ্ট এর এই নির্মম হত্যাকাণ্ড একটি পুরো জাতিকেই স্তব্ধ করে দেয়। ইতিহাসে এমন নিষ্ঠুরতা খুব কমই দেখা গেছে।
তবে আগস্ট শুধু শোকের মাস নয় — এই মাসে আছে প্রতিরোধের বার্তাও। সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলন, গণজাগরণ, ন্যায়বিচারের দাবিতে রাজপথে নামা তরুণদের দৃপ্ত পদচারণা — এগুলোই মনে করিয়ে দেয়, এই জাতি অন্যায় মেনে নেয় না।
৩. জুলাই-আগস্টের শিক্ষা
এই মাসগুলো আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয়, স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে লড়াই কখনো সহজ নয়, কিন্তু তা অনিবার্য। শোকের ভিতর থেকেও আশার আলো খুঁজে নিতে হয়। ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, যে জাতি নিজের অতীত ভুলে যায়, সে জাতি বারবার অন্ধকারে হারিয়ে যায়।
জুলাই ও আগস্ট আমাদের দায়িত্ব দেয়, আমরা যেন কখনও স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে দাঁড়ানো মানুষদের ভুলে না যাই, তাদের রক্ত যেন বৃথা না যায়।
—
শেষ কথা:
জুলাই-আগস্ট কোনো সাধারণ মাস নয়। এটি চেতনার মাস, আত্মত্যাগের মাস, আত্মসম্মানের মাস। এই মাস আমাদের শেখায় শোককে শক্তিতে পরিণত করতে, ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিতে এবং নতুন প্রজন্মকে একটি মুক্ত, ন্যায়ের ভিত্তিতে গড়া রাষ্ট্র উপহার দিতে।
✒️ আল-আমিন মিলু
আহ্বায়ক,
গনঅধিকার পরিষদ
সরিষাবাড়ি উপজেলা শাখা জামালপুর