নিজস্ব প্রতিবেদক
দেশের অগ্রগতির পথে যখনই সংস্কারের কথা আসে, তখন একটি শব্দ প্রায়ই উচ্চারিত হয়—”সংবিধান”। এটি এমন এক দলিল, যা জাতির মূল চেতনার পরিচায়ক, রাষ্ট্রের কাঠামোর দিকনির্দেশক। কিন্তু প্রশ্ন হলো, যখন এই সংবিধান নিজেই সংস্কারের প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়ায়, তখন কি সেটিকে গণভোটের মাধ্যমে পরিবর্তনের চিন্তা করা অন্যায়?
সংবিধান মানুষের জন্য, মানুষ সংবিধানের জন্য নয়। যদি সমাজ পরিবর্তিত হয়, রাষ্ট্রের কাঠামো, রাজনৈতিক চাহিদা, জনগণের আকাঙ্ক্ষা নতুন রূপ ধারণ করে, তবে তা প্রতিফলিত হওয়া উচিত সংবিধানেও। কিন্তু অনেক সময় দেখা যায়, কিছু বিশেষ গোষ্ঠী সংবিধানের আড়ালে নিজেদের স্বার্থ রক্ষার ঢাল তৈরি করে নেয়। তখনই সংবিধান হয় সংস্কারের শত্রু, অগ্রগতির বাধা।
গণভোট—এটি একটি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া। যখন কোনো জাতীয় ইস্যুতে বৃহৎ সিদ্ধান্ত নেওয়া প্রয়োজন হয়, তখন জনগণের মতামতই হতে পারে সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য পথ। সংবিধান পরিবর্তনের মতো গভীর ও গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তও যদি জনগণের হাতে তুলে দেওয়া যায়, তবে তাতে গণতন্ত্রের চর্চা যেমন দৃঢ় হয়, তেমনি মানুষের অংশগ্রহণও নিশ্চিত হয়।
বিশেষ করে যখন সংবিধানে এমন ধারা থাকে, যা ক্ষমতার ভারসাম্য নষ্ট করে, নাগরিক অধিকার খর্ব করে, অথবা কোনো গোষ্ঠীর আধিপত্যকে আইনি বৈধতা দেয়, তখন গণভোটের মাধ্যমে পরিবর্তন আনা শুধু যুক্তিযুক্ত নয়, বরং অপরিহার্য।
আমরা যদি সত্যিকারের এক নতুন বাংলাদেশ গড়তে চাই, তবে এই প্রশ্নটা আমাদের করতেই হবে— সংবিধান কি পরিবর্তনযোগ্য?
উত্তর হবে— হ্যাঁ, যদি সেটা জনগণের কল্যাণে হয়।
তাই, সময় এসেছে ভেবে দেখার—
আমরা কি সংবিধানকে পবিত্র গীতার মতো অচলায়তন করে রাখব, নাকি গণমানুষের চাওয়াকে গুরুত্ব দিয়ে, গণভোটের মাধ্যমে একটি সময়োপযোগী, ন্যায়ভিত্তিক, মানবিক সংবিধান গড়ব?
শুধু প্রশ্ন নয়, এখন দরকার উত্তর খোঁজার সাহস।