নিজস্ব প্রতিবেদক
সমাজ যখন আদর্শচ্যুতি আর মূল্যবোধহীনতার স্রোতে ভেসে যায়, তখন প্রকৃত নীতি ও আদর্শের কথা বলা যেন হয়ে পড়ে এক ধরনের "অপরাধ"। আজকের বাস্তবতায় আমরা এমন এক সময় অতিক্রম করছি, যেখানে নীতিবান মানুষের কণ্ঠস্বর চাপা পড়ে যাচ্ছে চতুর, সুবিধাবাদী আর শঠ লোকদের কোলাহলে।
এক সময় সমাজে বুদ্ধিজীবী, শিক্ষক, রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক, কর্মচারী কিংবা ব্যবসায়ী—যে যার জায়গা থেকে নীতি ও আদর্শের পক্ষে অবস্থান নিত। ভালো-মন্দের পার্থক্য স্পষ্ট ছিল। কিন্তু আজ? আজ নীতির কথা বললেই তা "অপ্রাসঙ্গিক" কিংবা "অবাস্তব" বলে উড়িয়ে দেওয়া হয়। যেন সততা, ন্যায়বিচার আর মানবিকতা এখন শুধুই বইয়ের পাতায় বা বক্তৃতার মঞ্চে ঠাঁই পেয়েছে।
রাজনীতি থেকে শুরু করে প্রশাসন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে ব্যবসা—সবখানে একটি ভয়াবহ প্রতিযোগিতা চলছে: কে কত দ্রুত সাফল্য পেতে পারে, তাতে পদ্ধতির নৈতিকতা নিয়ে কারো মাথাব্যথা নেই। মিথ্যা, চাটুকারিতা, তেলবাজি, দালালি এসব যেন এখন ‘যোগ্যতা’র প্রমাণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এই অবস্থা কি হঠাৎ করে হয়েছে? না, এটি দীর্ঘদিনের অবহেলা, নীরবতা ও নীতিহীনতার ফসল। এবং ভয়াবহ সত্য হলো, আজ নীতির পক্ষে কথা বললেই আপনি একা হয়ে যাবেন, ব্যঙ্গের শিকার হবেন, হয়তো নিগৃহীতও হবেন। তবুও কি চুপ থাকা যায়?
নীতি আর আদর্শ একদিনের জন্য নয়, তা প্রজন্ম গড়ার উপাদান। যদি আজ আমরা নীতিহীনদের হাতে সমাজ ছেড়ে দিই, তাহলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের সামনে কোনো আলোকবর্তিকা থাকবেই না।
তাই আজ প্রয়োজন—একটি আত্মপ্রত্যয়ের নতুন অভিযাত্রা। প্রয়োজন—নীতির পক্ষে, সত্যের পক্ষে একটুকু সাহস নিয়ে দাঁড়ানোর। যতদিন না শেষ নীতিবান মানুষটি মুখ বন্ধ করে ফেলেন, ততদিন আশার আলো নিভে যায়নি।
নীতি থাকবে, নীতিবানরাও টিকে থাকবে—শর্ত একটাই: মুখ বন্ধ না করে অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলতে হবে।
আল আমিন মিলু
আহ্বায়ক
গনঅধিকার পরিষদ সরিষাবাড়ি উপজেলা শাখা জামালপুর