নিজস্ব প্রতিবেদক
ভালো মানুষদের অধিকাংশ মানুষ শত্রুর চোখে দেখে—এই কথাটিকে আজ আর অস্বীকার করার উপায় নেই। সমাজে যারা সত্য বলে, অন্যায়ের প্রতিবাদ করে, স্বার্থের বিরুদ্ধে গিয়ে ন্যায়-নীতির পক্ষে দাঁড়ায়, তারাই আজ সবচেয়ে বেশি অবহেলিত, আঘাতপ্রাপ্ত, এমনকি অপবাদগ্রস্ত। প্রশ্ন ওঠে—তাহলে কি আমরা ধরে নেব, দেশের অধিকাংশ মানুষ খারাপকে সমর্থন করে?
এই প্রশ্নের উত্তর একেবারে সরল না হলেও বাস্তবতা ভয়াবহ। আমাদের সমাজে এখন এমন এক সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে, যেখানে মিথ্যা চালাকিকে বলে কৌশল, প্রতারণা হয়ে উঠেছে সাফল্যের সিঁড়ি, আর সৎ মানুষ পরিচিত হচ্ছেন "অসুবিধাজনক ব্যক্তি" হিসেবে। সত্যভাষী ব্যক্তিকে বলা হয়—"বেশি কথা বলে", আদর্শবানকে বলা হয়—"অভিনয় করে", আর প্রতিবাদকারীকে বলা হয়—"উস্কানিদাতা"।
এর পেছনে রয়েছে আমাদের চেতনার সংকট। আমরা আজ ব্যক্তিগত লাভকে জাতির কল্যাণের চেয়ে বড় করে দেখি, দুর্নীতিকে চতুরতা ভাবি, আর নির্লজ্জ সুবিধাবাদকেই চালাকি ধরে নিই। ফলে যে মানুষ নিজের স্বার্থ না দেখে জাতির স্বার্থের কথা ভাবে, সে হয়ে যায় ব্যতিক্রম—অসহনীয়, অবাঞ্ছিত।
ভালো মানুষরা সমাজের আয়না হয়ে দাঁড়ায়। তারা অন্যদের ভুল, লোভ, অন্যায়কে নগ্ন করে দেয়। তাই তাদের উপস্থিতিই হয়ে পড়ে অস্বস্তির কারণ। ফলে সমাজের একটা বড় অংশ, যারা নিজেদের স্বার্থেই অন্যায়ের সঙ্গে আপস করেছে, তারা চায় না ভালো মানুষ বাঁচুক বা এগিয়ে যাক। এভাবেই তারা হয়ে ওঠে ভালো মানুষের প্রতিপক্ষ।
তবে আমরা যদি এই বাস্তবতাকে চিরস্থায়ী ধরে নিই, তাহলে হেরে যেতে হবে মানবতার। সমাজের দায়িত্বশীল, সচেতন মানুষের উচিত—ভালোদের পাশে দাঁড়ানো, অন্যায়ের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়া। যারা এখনো সত্য ও ন্যায়ের প্রতি সম্মান রাখেন, তাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখাতে হবে—ভালো মানুষদের হেনস্তা করলেই সমাজ ঠিক চলে না।
ভালো মানুষদের শত্রু নয়, সমাজের ভবিষ্যৎ হিসেবে দেখা শুরু করতে হবে। না হলে শীঘ্রই এমন এক সমাজ তৈরি হবে যেখানে কেউ আর ভালো হতে সাহস পাবে না। তখন শুধু শাসন করবে অন্ধকার, আর আমরা সবাই হয়ে যাবো তার দাস।
সমাপ্তি নয়, শুরু হোক নতুন ভাবনার।
আল আমিন মিলু
আহ্বায়ক
গনঅধিকার পরিষদ
সরিষাবাড়ি উপজেলা শাখা
জামালপুর