নিজস্ব প্রতিবেদক
উত্তরা আকাশে আজ আর পাখা মেলে উড়ে না স্বপ্নের ডানা। বিমান দুর্ঘটনায় নিভে গেছে একেকটি তাজা প্রাণ, ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে কত শত পরিবারের স্বপ্ন। সন্তান হারিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন বাবা-মা, স্তব্ধ হয়ে গেছে ভাই-বোন, নিঃশেষ হয়ে গেছে গর্বিত পরিবারগুলোর আগামীকাল। বাংলার বাতাস যেন ভারী হয়ে আছে এই কান্না, এই হারানোর অসহনীয় বেদনায়।
একটা দুর্ঘটনা কত বড় হতে পারে? যারা হারিয়েছেন আপনজন, তাদের কাছে এটা জীবনভাঙা একটা যুদ্ধ। যারা হারায়নি, তাদের চোখে এটা হয়তো এক দিনের সংবাদ, পরদিনের পুরনো হেডলাইন। কিন্তু যে মা তার একমাত্র ছেলেকে শেষবারের মতো কফিনে দেখেছেন, তার জন্য এই দুর্ঘটনা মানে প্রতিটি নিঃশ্বাসেই মৃত্যু।
প্রশ্ন হচ্ছে—এই দুর্ঘটনা কি কেবল ভাগ্য?
নাকি এর পেছনে লুকিয়ে আছে অব্যবস্থাপনা, গাফিলতি, দুর্নীতি আর জবাবদিহিহীন এক ব্যবস্থা?
বিমান একটি উচ্চঝুঁকির পরিবহন। অথচ প্রতিটি ফ্লাইটে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার কথা যেখানে রাষ্ট্রের প্রধান দায়িত্ব, সেখানে আমরা দেখি—টেকনিক্যাল ফেইলিওর, পুরনো এয়ারক্রাফট, দক্ষতা ও প্রস্তুতির অভাব, এমনকি কখনো কখনো ঘুষ আর অনিয়মের ছায়া।
এই যদি হয় বাস্তবতা, তাহলে তো এ দুর্ঘটনা ‘দুর্ঘটনা’ নয়—এ এক পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।
আমরা আর কত প্রাণ হারালে শিখবো? আর কত তাজা লাশ নামবে কফিনে, আর কত মা-বাবা সন্তান হারিয়ে বাকরুদ্ধ হলে, রাষ্ট্র জবাব দেবে?
উত্তরার বিমান দুর্ঘটনা কেবল একটি দুর্ঘটনা নয়, এটি আমাদের সামষ্টিক ব্যর্থতার প্রতিচ্ছবি।
আজ সময় এসেছে মাথা তুলে দাঁড়ানোর, রাষ্ট্রকে জবাবদিহির কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর। শুধু তদন্ত কমিটি নয়, চাই শাস্তি, চাই দায় স্বীকার, চাই ভবিষ্যতের নিরাপদ আকাশ।
এই কান্না থামাতে হবে।
এই মৃত্যু থামাতে হবে।
এই লজ্জা আমাদের ঘোচাতেই হবে।
---
উত্তরা’র আকাশে যেন আর কোনো বাবার সন্তান এভাবে ঝরে না যায়,
বাংলার বাতাস যেন আর কখনো এমন শোক বইতে না হয়।
-আল আমিন মিলু
আহ্বায়ক
গনঅধিকার পরিষদ
সরিষাবাড়ি উপজেলা শাখা
জামালপুর