নিজস্ব প্রতিবেদক
সমালোচনা গণতন্ত্রের প্রাণ। একটি রাষ্ট্র বা সমাজ তখনই সুস্থভাবে বিকশিত হয়, যখন সেখানে মত প্রকাশের স্বাধীনতা থাকে, প্রশ্ন তোলার অধিকার থাকে এবং সমালোচনাকে গ্রহণ করার সাহস থাকে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে, আজ আমাদের সমাজে বা রাষ্ট্রে সমালোচনাকে শত্রু মনে করা হয়, সমালোচককে বিদ্বেষে ঢেকে দেওয়া হয় এবং মতপ্রকাশকে দমন করতে ভয়ঙ্কর সহিংসতা পর্যন্ত করা হয়। এটাই বাকস্বাধীনতার সবচেয়ে বড় হরণ।
যারা সমালোচনার মুখোমুখি হতে পারেন না, তারা মূলত আত্মবিশ্বাসহীন ও স্বৈর প্রবৃত্তির অধিকারী। তারা জানেন, সমালোচনা টিকিয়ে দিলে মুখোশ খুলে যাবে, ভণ্ডামি প্রকাশ হয়ে পড়বে, আর ক্ষমতার মিথ্যা জাঁকজমক টিকবে না। তাই তারা গলা চেপে ধরেন, জেল-জুলুম চালান, কখনও সাইবার হামলা আবার কখনও গুম-খুনের পথও বেছে নেন। এতে শুধু ব্যক্তি নয়, সমাজ ও রাষ্ট্রের ভবিষ্যতকেই বিপন্ন করা হয়।
প্রকৃত গণতন্ত্রে রাষ্ট্রনায়কের শক্তি পরিমাপ হয় তার সমালোচনা সহ্য করার ক্ষমতায়। যারা বিরোধী কণ্ঠ শুনে ভয় পান, তারা জনতার প্রকৃত বন্ধু হতে পারেন না। যারা সমালোচককে শত্রু ভাবেন, তারা দেশের কল্যাণ নয় বরং নিজেদের টিকে থাকার রাজনীতি করেন। তাই আজ দরকার এমন একটি রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিবেশ, যেখানে সবাই নিজের মত প্রকাশ করতে পারবেন নির্ভয়ে, আর শাসক শ্রেণি সেই মতকে শুনবেন, ভাববেন, প্রয়োজনে সংশোধন করবেন।
বাকস্বাধীনতা কোনো উপহার নয়, এটি একটি অধিকার। এই অধিকার হরণকারী যে-ই হোক, সে গণতন্ত্রের শত্রু। তাই আসুন, আমরা এমন এক রাষ্ট্র গড়ার শপথ নেই, যেখানে সমালোচনার জবাব দেওয়া হবে যুক্তিতে, সম্মান রক্ষা করা হবে মতবাদের, আর সহিংসতার জায়গা থাকবে কেবল ইতিহাসের গহ্বরে। কারণ, সমালোচনাকে দমন করার ক্ষমতা যাদের আছে, তারাই একদিন ইতিহাসে স্বৈরাচার বলে চিহ্নিত হয়।
আল আমিন মিলু
আহ্বায়ক
গনঅধিকার পরিষদ
সরিষাবাড়ি উপজেলা শাখা
জামালপুর