নিজস্ব প্রতিবেদক
একটি জাতির ইতিহাসে কিছু সময় চিরস্মরণীয় হয়ে থাকে। তেমনি ২০২৪ সালের জুলাই ছিল গণজাগরণের বিস্ফোরণ—একটি স্বপ্ন, একটি প্রতিশ্রুতি, একটি পুনর্জাগরণের সূচনা। লাখো মানুষের আত্মত্যাগ, শপথ আর সংগ্রামের মধ্য দিয়ে যে ‘জুলাই বিপ্লব’ রচিত হয়েছিল, তার মূল উদ্দেশ্য ছিল রাষ্ট্রীয় সংস্কার, ন্যায়ভিত্তিক শাসন এবং জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা।
কিন্তু আজ, এক বছর পর, আমরা কি প্রশ্ন করতে পারি না—বিপ্লবের সেই মহান চেতনার প্রতি আমরা কতটা সৎ থাকতে পেরেছি? যারা জুলাইয়ের পতাকা হাতে শপথ নিয়েছিলেন, তারাই যদি সংস্কারের দরজায় তালা ঝুলিয়ে দেন, তবে সেটিই কি প্রকৃত গাদ্দারী নয়?
সংস্কার মানেই শুধু আইন পরিবর্তন নয়—সংস্কার মানে একটি দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন, পুরনো অবিচারকে চ্যালেঞ্জ করা, সিস্টেমকে গণমুখী করা। কিন্তু আমরা দেখছি, পুরনো বলয়ই আবার নতুন মুখোশে ফিরে আসছে। যাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন, তারাই আজ নতুন রঙে নিজেদের জাহির করছে। আর আমরা কিছু মানুষ, ব্যক্তি স্বার্থ আর সুবিধাবাদী চক্রের চাপে পড়ে আবারও সেই পুরনো পথেই হাঁটছি।
সংস্কারকে ‘না’ বলা মানে জনগণকে ‘না’ বলা। বিপ্লব মানে তো কেবল সরকার পতন নয়, বরং রাষ্ট্র পুনর্গঠনের প্রতিশ্রুতি। আর যদি সেই প্রতিশ্রুতি পূরণ না হয়, তবে সেই বিপ্লব একদিন ব্যর্থ ইতিহাসের পাতায় চাপা পড়বে। কেউ দায় নেবে না, কিন্তু ইতিহাস জবাব চাইবে।
আজ যারা বলেন, “এত বেশি সংস্কার লাগবে না, ধীরে ধীরে হবে”, তারা যেন ভুলে না যান—সংস্কারহীন ধৈর্য মানে অন্যায়ের সাথেই আপস। আর অন্যায়ের সাথে আপস মানে হল, যারা জুলাইয়ে রক্ত দিয়েছিল, তাদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা।
জুলাই বিপ্লবের প্রকৃত মর্যাদা দিতে হলে—রাষ্ট্র ব্যবস্থার আমূল সংস্কার করতেই হবে। প্রশাসন, নির্বাচন কমিশন, বিচার বিভাগ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ রাষ্ট্রের সকল স্তরে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে।
জুলাই শুধু স্মৃতির দিন নয়—এটি একটি দায়, একটি আন্দোলনের শপথ। যারা সংস্কারকে থামাতে চায়, তারা আসলে সেই শপথের সাথে বেঈমানি করছে।
আসুন, সবাই মিলে বলি—
সংস্কার ছাড়া নয়, জুলাইয়ের বিপ্লব পূর্ণতা পাক।
গণআকাঙ্ক্ষার সাথে গাদ্দারী নয়, বরং দায়িত্ববান নেতৃত্বেই হোক আমাদের আগামী পথচলা।
আল আমিন মিলু
আহবায়ক
গনঅধিকার পরিষদ
সরিষাবাড়ি উপজেলা শাখা
জামালপুর