নিজস্ব প্রতিবেদক
জনগণ এখন আর নীরব দর্শক নয়। মানুষ দেখে, বোঝে এবং এখন প্রশ্ন তোলে। আজ বাংলাদেশের রাজনীতিতে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন: যে সরকার একটি সিটি কর্পোরেশনের মেয়র পদে সৃষ্ট দ্বন্দ্ব মেটাতে হিমশিম খায়, সেই সরকার কিভাবে পুরো দেশের—৪০০ আসনের—নির্বাচনী ফলাফল নিরপেক্ষভাবে নিশ্চিত করবে?
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন, দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক ইউনিট। যেখানে কোটি কোটি মানুষের জীবনযাত্রা নির্ভর করে একটি মেয়রের সিদ্ধান্তের উপর। অথচ সেই মেয়র পদে কে আসবেন, কীভাবে দায়িত্ব নেবেন, বা আদৌ তিনি বৈধ কিনা—এই প্রশ্নেই সরকার, নির্বাচন কমিশন, এমনকি আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে। এতটুকু সমস্যা সমাধানে যদি এত জটিলতা হয়, তাহলে একটি জাতীয় নির্বাচনে যেখানে হাজারো প্রার্থী, কোটি ভোটার, লাখো প্রশাসনিক কর্মকর্তার সমন্বয় প্রয়োজন—সেখানে সরকার কীভাবে সুষ্ঠুতা নিশ্চিত করবে?
এ প্রশ্নে শুধু সন্দেহ নয়, জনগণের মনে জন্ম নিচ্ছে ভয়। কারণ, যেখানে স্থানীয় স্তরের নেতৃত্ব নির্ধারণেই স্বচ্ছতা ও সক্ষমতার অভাব, সেখানে জাতীয় নেতৃত্ব বাছাইয়ের ক্ষেত্রে স্বাভাবিকভাবেই এক ধরনের অনাস্থা তৈরি হচ্ছে।
আরও গুরুত্বপূর্ণ হলো—এই অক্ষমতা কেবল সরকারের নয়, এটি নির্বাচন কমিশনের, এটি প্রশাসনের, এটি রাষ্ট্রযন্ত্রের। একজন মেয়র বেছে নিতে যেখানে এত জটিলতা, সেখানে সারা দেশের ৪০০ এমপি নির্বাচন এক বিশাল প্রহসনের আশঙ্কা তৈরি করছে।
জনগণ প্রশ্ন তোলে:
একজন মেয়রের সমস্যা সমাধান যদি না হয়, তাহলে কি জনগণ আশা করবে নির্বাচনী অনিয়ম, কেন্দ্র দখল, জাল ভোট বা গননা কারচুপি ঠেকানো যাবে?
কোথায় সেই রাষ্ট্রীয় কাঠামো, যে কাঠামো দিয়ে অন্তত একটি সিটি নির্বাচনে স্বচ্ছতা আনা সম্ভব?
একটা জিনিস পরিষ্কার—ক্ষমতা থাকলেই দায়িত্ববোধ জন্মায় না। আর দায়িত্ববোধ ছাড়াই কোনো সরকার বা কমিশন জাতির ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করতে পারে না।
সুতরাং, জনগণের আজকের প্রশ্ন একেবারে যৌক্তিক: “একটি মেয়রের বিতর্ক যেখানে মেটাতে পারে না, তারা পুরো দেশের ভবিষ্যৎ কীভাবে নির্ধারণ করবে?”
এই প্রশ্নের উত্তর না দিলে, নির্বাচনের আগে আর কোনো প্রচার নয়—শুধু অনাস্থার আগুনেই পুড়বে রাষ্ট্রব্যবস্থা। জনগণ এখন শুধু ভোটের দাবি করছে না, তারা চাইছে বিশ্বাসযোগ্যতা।
আর এই বিশ্বাস অর্জন সম্ভব দায়িত্বশীলতা, স্বচ্ছতা ও রাজনৈতিক সদিচ্ছা দিয়েই—কৌশল দিয়ে নয়।
আল আমিন মিলু
আহ্বায়ক
গনঅধিকার পরিষদ
সরিষাবাড়ি উপজেলা শাখা
জামালপুর