নিজস্ব প্রতিবেদক
মানবিক হওয়া মানে শুধু “আমি মানুষের পাশে আছি” বলা নয়—বরং প্রকৃত মানবিকতা হলো নিজের স্বার্থের প্রাচীর ভেঙে অপরের কষ্ট ভাগ করে নেওয়ার মানসিকতা। দুর্ভাগ্যজনকভাবে, আমাদের সমাজে আজ মানবিকতার সংজ্ঞা যেন শব্দের ফুলঝুরি আর ফেসবুক স্ট্যাটাসে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছে।
মানুষ যখন দুঃখে পড়ে, তখন তারা পাশে চায় একজন নিঃস্বার্থ মানুষকে, যে নিজের স্বার্থ না দেখে মানুষের প্রয়োজনকে প্রাধান্য দেবে। অথচ বাস্তবতা হলো—স্বার্থের অন্ধকারে ঢেকে গেছে আমাদের আত্মা। কেউ বিপদে পড়লে আমরা দেখি, তার সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক কতটুকু; ব্যক্তিগত লাভ আছে কিনা; না থাকলে হয়তো একটা সান্ত্বনার বুলি আওড়ে সরে যাই।
মানবিক হওয়া মানে নিজের প্রয়োজন ও স্বপ্নগুলোকে দমিয়ে রেখে অন্যের জন্য কিছু করে যাওয়া। একজন রক্তদাতা, একজন গরিব শিশুর স্কুলের খরচ তুলে দেওয়া ব্যক্তি, একজন বৃদ্ধার ওষুধ কিনে দেওয়া তরুণ—এরা মুখে বড় কিছু বলেন না, কিন্তু চুপচাপ একটা সমাজ বদলে দেন।
মানবিকতা দেখাতে বড় মঞ্চ লাগে না, লাগে একটা বড় হৃদয়। আর সেই হৃদয় গড়তে হয় আত্মত্যাগের চর্চায়, অহংকারের পতনে, ক্ষমতার মোহ ত্যাগে, এবং দুঃখীর মুখে হাসি ফোটানোর আনন্দে।
এই সময়ের সবচেয়ে বড় সংকট হলো—মানবিকতার অভাব। আমাদের রাজনীতি, সমাজনীতি, অর্থনীতি—সবই যেন এখন লাভ-লোকসানের খেলার মাঠ। সেখানে হৃদয়হীন নেতারাও মানবতার বুলি ছুঁড়ে দেন, অথচ তারা জানেন না ক্ষুধার্ত একজন শিশুর চোখের ভাষা।
মানবিক মানুষ হতে হলে আগে নিজের স্বার্থ ত্যাগ করতে শিখতে হবে। ত্যাগ ছাড়া ভালোবাসা আসে না, আর ভালোবাসা ছাড়া মানবিকতা—শুধু লোক দেখানো অভিনয়।
আজ তাই প্রশ্ন নয়, আহ্বান—চলো, আমরা মুখের বুলি নয়, আত্মার ত্যাগ দিয়ে এক মানবিক সমাজ গড়ি। যেখানে মানুষ হবে মানুষের আশ্রয়।
“মানুষ তার মুখে নয়, কাজে মানবিক হয়।”
আল আমিন মিলু
আহ্বায়ক
গনঅধিকার পরিষদ
সরিষাবাড়ি উপজেলা শাখা
জামালপুর