নিজস্ব প্রতিবেদক 

এই দেশের প্রতিটি নাগরিক আজ উন্নত রাষ্ট্রের স্বপ্ন দেখে। কিন্তু বারবার আমরা হতাশ হই, কারণ ক্ষমতার লোভ আমাদের রাজনীতিকে গ্রাস করেছে। যারা নেতৃত্বে থাকার কথা ছিল আদর্শের জন্য, তারাই পরিণত হয়েছে ক্ষমতার সিঁড়ি বেয়ে ওপরে ওঠা খেলোয়াড়ে। অথচ একবার যদি কেউ সত্যিই ক্ষমতার লোভ ত্যাগ করে আদর্শ রাষ্ট্র গঠনে আত্মনিয়োগ করেন, তাহলে এই দেশের চিত্র পাল্টে যেতে পারে।

একজন রাজনীতিবিদের প্রথম পরিচয় হওয়া উচিত—তিনি জনগণের সেবক। কিন্তু বাস্তবে আমরা দেখি, নির্বাচন-পরবর্তী সময়ে অধিকাংশ নেতার আচরণে পরিবর্তন আসে। জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন, ঘিরে ফেলেন নিজেকে স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীতে। পদ-পদবি, লুটপাট, ক্ষমতার মসনদ আঁকড়ে ধরা যেন হয়ে দাঁড়ায় মূল লক্ষ্য। আর এই লোভই প্রতিনিয়ত আমাদের রাষ্ট্রব্যবস্থাকে দুর্বল করে দিচ্ছে।

অথচ ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়—নেলসন ম্যান্ডেলা, মহাত্মা গান্ধী,মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী, তাঁরা ক্ষমতা নয়, আদর্শের পথে হেঁটেই মানুষের হৃদয়ে অমর হয়েছেন। তাঁরা জানতেন, সত্যিকার নেতৃত্ব মানে ত্যাগ, আর সেই ত্যাগের মধ্য দিয়েই গড়ে ওঠে একটি আদর্শ রাষ্ট্র।

আজ প্রয়োজন এমন নেতৃত্ব, যারা একবার হলেও নিজ স্বার্থকে পেছনে ফেলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কথা ভাববে। যারা বিশ্বাস করবে—একটা শিশুর জন্য সুস্থ সমাজ গড়ার দায়িত্ব তাদের। যারা বুঝবে, দারিদ্র্য, দুর্নীতি আর বৈষম্যের শেকড় কেটে ফেলতে না পারলে রাষ্ট্র কখনোই আদর্শ হতে পারে না।

আমরা যারা সাধারণ নাগরিক, আমাদেরও দায়িত্ব কম নয়। প্রশ্ন তুলতে হবে, প্রতিবাদ করতে হবে, এবং সাহস করে বলতে হবে—ক্ষমতা নয়, আমাদের দরকার আদর্শ। এমন একটি বাংলাদেশ গড়তে হবে, যেখানে নেতা নয়, নেতৃত্বই সম্মান পাবে। যেখানে রাজনৈতিক দল নয়, দেশের স্বার্থই হবে প্রধান।

পরবর্তী প্রজন্ম আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে। তারা একদিন জিজ্ঞেস করবে—তোমরা কী করেছিলে?
চলুন, এখনই সেই প্রশ্নের উত্তর প্রস্তুত করি। একবার নিজের স্বার্থ ভুলে আদর্শ রাষ্ট্র গঠনে ভূমিকা রাখি। তবেই তারা পাবে একটি সুন্দর, শান্তিপূর্ণ, মানবিক বাংলাদেশ।

—

শেষ কথা:
ক্ষমতার মোহ ক্ষণস্থায়ী। আদর্শের আলো চিরন্তন। যদি কেউ সত্যিই ইতিহাসে বাঁচতে চায়, তাকে এখনই আদর্শ বেছে নিতে হবে।

-আল আমিন মিলু
আহ্বায়ক
গনঅধিকার পরিষদ
সরিষাবাড়ি উপজেলা শাখা
জামালপুর