নিজস্ব প্রতিবেদক
✅ ১. স্বাধীন ও শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন (EC)
সংবিধানিক স্বাধীনতা নিশ্চিতকরণ: নির্বাচন কমিশন যেন রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত থাকে, সে জন্য কমিশনের সদস্য নিয়োগ একটি স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে হতে হবে (যেমন: একটি সর্বদলীয় কমিটির মাধ্যমে সুপারিশ)।
কার্যকর বাজেট ও প্রশাসনিক স্বাধীনতা দিতে হবে, যাতে কমিশন নিজস্ব ক্ষমতায় নির্বাচন আয়োজন করতে পারে।
—
✅ ২. তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আদলে একটি ‘নির্বাচনী সময়কালীন নিরপেক্ষ সরকার’
সংসদ ভেঙে দিলে নির্বাচনকালীন সরকার ক্ষমতায় আসবে, যারা:
রাজনীতির বাইরে থাকা প্রাক্তন বিচারক, আমলা বা সম্মানজনক নাগরিকদের নিয়ে গঠিত হবে।
শুধুমাত্র প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করবে, নীতিনির্ধারণ করবে না।
এই সরকার নির্বাচন কমিশনকে সব ধরনের সহায়তা দিবে।
—
✅ ৩. ভোটার তালিকা ও জাতীয় পরিচয়পত্র হালনাগাদ
স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র ও বায়োমেট্রিক ডাটার ভিত্তিতে একক ও সঠিক ভোটার তালিকা নিশ্চিত করতে হবে।
ভোটার তালিকায় ডিজিটাল যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া বাধ্যতামূলক করতে হবে, যেন একাধিক বা ভুয়া ভোটার না থাকে।
—
✅ ৪. ইলেকট্রনিক ভোটিং (EVM) বা পেপার ব্যালট — নির্ভরযোগ্য পদ্ধতি নির্ধারণ
জনগণের আস্থা থাকলে EVM ব্যবহার করা যেতে পারে, তবে তা হোক স্বচ্ছতা, প্রযুক্তিগত নির্ভরযোগ্যতা ও ব্যালট অডিটের নিশ্চয়তার ভিত্তিতে।
যদি আস্থা না থাকে, তাহলে সিলযুক্ত কাগজের ব্যালট ব্যবহার করে কড়া নজরদারির মাধ্যমে গণনা করা হোক।
—
✅ ৫. সেনাবাহিনী ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নিরপেক্ষ তদারকি
নির্বাচনকালে সেনাবাহিনী মোতায়েন রাখা যেতে পারে, যারা পুরো নির্বাচনী এলাকায় নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করবে।
ভোটকেন্দ্রে পর্যাপ্ত সিসিটিভি ও পর্যবেক্ষক নিয়োগ করা বাধ্যতামূলক করতে হবে।
—
✅ ৬. প্রার্থীদের যোগ্যতা ও স্বচ্ছতা যাচাই
দুর্নীতিগ্রস্ত, দণ্ডপ্রাপ্ত ও সহিংসতার ইতিহাস আছে এমন প্রার্থীদের নির্বাচন থেকে অযোগ্য ঘোষণা করা।
প্রত্যেক প্রার্থীকে আয়-ব্যয়ের হিসাব, শিক্ষাগত যোগ্যতা ও সম্পদের বিবরণ প্রকাশ করতে বাধ্য করা।
—
✅ ৭. গণমাধ্যম ও পর্যবেক্ষকের স্বাধীনতা
নির্বাচনী সময় গণমাধ্যম যেন স্বাধীনভাবে রিপোর্ট করতে পারে, সেই ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
দেশি-বিদেশি নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের পূর্ণ স্বাধীনতা ও নিরাপত্তা দিতে হবে।
—
✅ ৮. নির্বাচনের পর ফলাফলের স্বচ্ছতা ও অভিযোগ নিষ্পত্তি
ফলাফল ঘোষণায় সঠিকতা, তাত্ক্ষণিকতা ও কেন্দ্রভিত্তিক ফল প্রকাশ নিশ্চিত করতে হবে।
নির্বাচনের পরে কেউ অভিযোগ করলে তার জন্য স্বতন্ত্র নির্বাচন ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে হবে, যা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে রায় দেবে।
—
✅ ৯. নাগরিক সম্পৃক্ততা ও শিক্ষা
সাধারণ মানুষকে নির্বাচনের গুরুত্ব, ভোটাধিকার ও দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন করা প্রয়োজন।
স্কুল-কলেজ পর্যায়ে গণতন্ত্র ও নির্বাচন বিষয়ক পাঠ অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে।
—
✅ ১০. অংশগ্রহণমূলক রাজনৈতিক সংস্কৃতি গঠন
বড় দুই রাজনৈতিক দলের মধ্যে বিশ্বাস ও সংলাপের পরিবেশ তৈরি করতে হবে।
ছোট দল ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে হবে।
🔚 উপসংহার
বাংলাদেশের জন্য একটি সুন্দর নির্বাচন পদ্ধতি হলো — স্বাধীন নির্বাচন কমিশনের অধীনে, নিরপেক্ষ সময়কালীন সরকারের তত্ত্বাবধানে, অংশগ্রহণমূলক, স্বচ্ছ, নিরাপদ ও গ্রহণযোগ্য ভোটদান ও ফলাফল ঘোষণার প্রক্রিয়া। এই প্রক্রিয়া বাস্তবায়ন হলে রাজনৈতিক অস্থিরতা কমবে, জনগণের আস্থা বাড়বে এবং গণতন্ত্র শক্তিশালী হবে।
আল আমিন মিলু
আহ্বায়ক
গনঅধিকার পরিষদ
সরিষাবাড়ি উপজেলা শাখা
জামালপুর