নিজস্ব প্রতিবেদক
যে আইনে নির্দোষ মানুষ মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত হয়, সেই আইন শুধু অমানবিক নয়, সেটি এক ধরনের রাষ্ট্রীয় হত্যাকাণ্ডও বটে। ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, বহু রাষ্ট্রে সৈরশাসকের নির্দেশে সাজানো মামলায় নিরপরাধ মানুষকে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ বিচার নয়, এ বরং বিচার ব্যবস্থার মুখে চপেটাঘাত।
আমরা যখন দেখি, একজন মানুষ বিনা দোষে বছরের পর বছর জেল খেটে বেরিয়ে আসে অথবা প্রমাণ হয় যে তাকে দেওয়া মৃত্যুদণ্ড ছিল সম্পূর্ণ ভুল, তখন আমরা কেবল আফসোসই করতে পারি না – আমাদের জবাবদিহি চাইতে হয়। কারণ, একটি ভুল মৃত্যুদণ্ড মানে একটি সম্পূর্ণ পরিবারের জীবন-ধ্বংস, সমাজে একটি ভুল বার্তা, এবং মানবাধিকারের সরাসরি লঙ্ঘন।
কিন্তু প্রশ্ন হলো – এসব ভুলের দায় কে নেবে?
কেন একজন বিচারক, তদন্তকারী কর্মকর্তা বা রাজনৈতিক আদেশপ্রাপ্ত প্রশাসক এমন সিদ্ধান্ত নিতে পারেন, যার পরিণামে একটি জীবন শেষ হয়ে যায়?
এখানেই সময় এসেছে আমাদের বলার – এই আইন সংস্কার করতেই হবে।
আমরা চাই একটি মানবিক বিচারব্যবস্থা, যেখানে আইনের শাসন থাকবে, কিন্তু সেই শাসন হবে ন্যায়ভিত্তিক, প্রযুক্তিনির্ভর, প্রমাণনির্ভর এবং মানবিকতা-বান্ধব। যেখানে রাষ্ট্রের কোনো কর্তৃপক্ষ কিংবা শাসক দল মত বা বিরোধিতার ভিত্তিতে আইনকে অস্ত্র বানিয়ে ব্যবহার করতে পারবে না।
আমরা চাই – যে সব কর্মকর্তার ভুল বা অবহেলার কারণে নির্দোষ একজন মানুষ মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত হয়, তাদের বিরুদ্ধেও হোক তদন্ত, জবাবদিহি, শাস্তি।
এ দেশ আইন মানে বলে গর্ব করে। তাহলে সেই আইন নির্ভুল হতে হবে। যদি সে ভুল করে মৃত্যুর রায় দেয়, তাহলে সেটা শুধুই ভুল নয় – সেটা ভয়ংকর অপরাধ। এবং অপরাধীদের রক্ষা করার আর কোনো সুযোগ থাকা উচিত নয়।
এই সংস্কারের দাবিই আজ সময়ের দাবি।
লেখক: আল আমিন মিলু
আহ্বায়ক
গনঅধিকার পরিষদ
সরিষাবাড়ি উপজেলা শাখা
জামালপুর