নিজস্ব প্রতিবেদক
ড. মুহাম্মদ ইউনূস—একটি নাম, একটি প্রজন্ম, একটি আদর্শ। নোবেলজয়ী এই মানুষটি যখন সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষদের অর্থনৈতিক মুক্তির কথা বলেন, তখন তাঁকে শুধুই একজন অর্থনীতিবিদ হিসেবে বিচার করাটা অন্যায়। তিনি একজন সমাজ সংস্কারক, একজন মানবিক নেতৃত্বের প্রতীক।
সম্প্রতি কিছু বক্তব্য ও রাজনৈতিক তৎপরতায় মনে হয়েছে, কেউ কেউ ভাবছেন হুমকি-ধমকির মাধ্যমে ড. ইউনূসকে চুপ করিয়ে রাখা যাবে। হয়তো ভাবছেন, আইনের মোড়কে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চালিয়ে তাঁকে দিয়ে একটা যেনোতেনো নির্বাচন করিয়ে বিদায় করা যাবেএবং তাকে জনমতের বাইরে ঠেলে দেওয়া সম্ভব হবে। কিন্তু তারা বোধহয় ভুলে গেছেন—এই মানুষটিই বিশ্বদরবারে বাংলাদেশের সম্মান হয়ে দাঁড়িয়েছেন। তিনি কোনো ফ্যাসিস্ট শক্তির চক্রান্তে মাথা নোয়াবেন না, জীবন থাকতে অন্যায়, দুর্নীতি আর স্বৈরতন্ত্রের পক্ষে দাঁড়াবেন না।
ড. ইউনূসের মতো ব্যক্তিত্বরা হুমকি পেয়ে পিছু হটে না। বরং সমাজে চলমান অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে তাঁরা প্রতিরোধের প্রতীক হয়ে ওঠেন। আজ তাঁর বিরুদ্ধে যেভাবে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে, তা কোনো গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে কল্পনাও করা যায় না। এ যেন আমাদের সামষ্টিক বিবেকের ওপর চরম আঘাত।
আমরা ভুলে গেলে চলবে না—দেশের মানুষ এখন আগের মতো নির্বাক নেই। গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার আর মানবিক নেতৃত্বের যে দাবিতে মানুষ আজ সোচ্চার, সেখানে ড. ইউনূসের অবস্থান একটি আদর্শের প্রতিনিধিত্ব করে। তাঁকে হেয় করে, ভয় দেখিয়ে, অথবা মিথ্যা অপবাদ দিয়ে জনতার ভালোবাসা থেকে বিচ্ছিন্ন করা যাবে না।
এবার সময় এসেছে আত্মসমালোচনার। পরিবর্তন আনতে হলে হুমকি-ধমকি নয়, প্রয়োজন রাজনৈতিক সংস্কার। স্বচ্ছ নির্বাচন, জবাবদিহিমূলক প্রশাসন, এবং মানবিক নেতৃত্বই পারে দেশকে সামনে এগিয়ে নিতে। ফ্যাসিবাদী আচরণ কিংবা প্রতিশোধপরায়ণ রাজনীতি দিয়ে সেই গন্তব্যে পৌঁছানো সম্ভব নয়।
ড. ইউনূসের মুখ বন্ধ করে নয়, বরং তাঁর মতো মানুষদের পরামর্শকে মূল্যায়ন করেই এগিয়ে যেতে হবে। দেশের ভবিষ্যৎ রচনার পথ রুদ্ধ নয়, উন্মুক্ত হোক নতুন সম্ভাবনার জন্য। আর সেই সম্ভাবনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকুক গণতন্ত্র, মানবতা আর সত্যের পক্ষে সাহসী কণ্ঠ।
-আল আমিন মিলু
আহ্বায়ক
গনঅধিকার পরিষদ
সরিষাবাড়ি উপজেলা শাখা
জামালপুর