নিজস্ব প্রতিবেদক
সম্প্রতি একটি খসড়া আইন আলোচনায় এসেছে, যেখানে বলা হয়েছে—চুরি করলে বা ঘুষ নিলে সরকারি চাকরি থাকবে না। স্বাভাবিকভাবেই এ কথা শুনে সাধারণ মানুষ মনে করেছে, রাষ্ট্র হয়তো অবশেষে দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে। কিন্তু বিস্ময়করভাবে এই আইনের বিরোধিতায় একাংশ আমলারা আন্দোলনে নেমেছেন।
প্রশ্ন ওঠে—তাহলে তারা কী প্রমাণ করতে চাইছেন?
এখানে সাধারণ নাগরিক হিসেবে আমাদের যে যুক্তিগুলো ভাবতে হয়:
১. আপত্তি কিসে?
যে কোনো চাকরিতে জবাবদিহিতা থাকে। একজন শিক্ষক যদি প্রশ্নফাঁস করেন, বিচারক যদি ঘুষ নেন, ডাক্তার যদি ওষুধ কোম্পানির কমিশনে রোগীকে ভুল ওষুধ দেন—তাহলে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়। তাহলে প্রশাসনের কর্মচারীরা এই শাস্তির বাইরে থাকবেন কেন?
২. দুর্নীতিকে রক্ষা করার আন্দোলন?
যারা এই আইনের বিরোধিতা করছেন, তারা যদি দাবি করেন এটি ‘অমানবিক’ বা ‘অতিরিক্ত শাস্তি’, তাহলে প্রশ্ন আসে—আপনারা কি চান দুর্নীতির পরও চাকরি বজায় থাকুক? একে কি ব্যাখ্যা করা যায় নৈতিকতার মানদণ্ডে?
৩. নাগরিকের ভাত নাই, আর কর্মকর্তার কৃত্রিম অধিকার?
যে রাষ্ট্রে শিক্ষিত যুবক বেকার, কৃষক ফসলের দাম পায় না, শ্রমিক বোনাস পায় না—সেখানে আমলা সম্প্রদায় নিজেদের দুর্নীতির অধিকারকে চাকরির অংশ মনে করলে, সেটা জনগণের সঙ্গে নির্মম তামাশা।
৪. অভ্যন্তরীণ শুদ্ধির পরিবর্তে বাহ্যিক প্রতিরোধ?
দুর্নীতির দায় পুরো রাষ্ট্রযন্ত্রের নয়, কিছু অসাধু কর্মীর। কিন্তু যখন গোটা প্রশাসনিক কাঠামো একজোট হয়ে দুর্নীতির বিরুদ্ধে আইন ঠেকাতে চায়, তখন বোঝা যায় সমস্যাটা ব্যক্তির নয়—পদ্ধতির।
এই আন্দোলন আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে—আমলাতন্ত্রের একাংশ এখনো নিজেদের ‘আইনের ঊর্ধ্বে’ ভাবেন। তারা চায় এমন এক রাষ্ট্র, যেখানে তারা ভুল করলেও দায় এড়াতে পারেন।
তবে সুখের বিষয়—এই আইন পাশ হলে এটা হবে জনগণের বিজয়। এটা হবে সেই বার্তা, “রাষ্ট্র কারো পকেট নয়, জনগণের ট্রাস্ট।”
আমাদের প্রশ্ন একটাই—চুরি না করলে, ঘুষ না নিলে তো চাকরি থাকবে! তাহলে ভয়টা কোথায়?
-আল আমিন মিলু
আহ্বায়ক
গনঅধিকার পরিষদ
সরিষাবাড়ি উপজেলা শাখা
জামালপুর