নিজস্ব প্রতিবেদক
চেয়েছিলাম—একটা নিরপেক্ষ উপদেষ্টা পরিষদ হবে। যারা রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে দেশের প্রয়োজনে, জাতির প্রয়োজনে সিদ্ধান্ত নেবে। একটি শক্তিশালী ও দায়িত্বশীল দল, যারা জনগণের চাওয়া-পাওয়া, অধিকার-অসন্তোষ, স্বপ্ন ও সম্ভাবনার যথার্থ মূল্য বুঝবে। সংস্কার হবে, জবাবদিহিতা আসবে, স্বচ্ছতা ও ন্যায়বিচারের ভিত্তি গড়ে উঠবে। মানুষ পাবে তার ন্যায্য অধিকার। কিন্তু হায়, আজ জাতি হতাশ—চরমভাবে হতাশ।
এই উপদেষ্টা পরিষদকে ঘিরে মানুষের প্রত্যাশা ছিল আকাশছোঁয়া। কিন্তু বাস্তব চিত্র একেবারে ভিন্ন। আজ এই পরিষদে আমরা দেখতে পাই বিভাজন, পক্ষপাতিত্ব ও নির্লজ্জ নীরবতা। কেউ প্রভাবশালী দলের ছায়ায়, কেউ প্রাক্তন আমলাতান্ত্রিক সুবিধার ঘোরে, কেউ আবার মিডিয়া বা আন্তর্জাতিক লবির চাপে সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। যাঁরা নিরপেক্ষ থাকার কথা ছিল, তাঁরা আজ বিভক্ত রাজনৈতিক দর্শনে। যাঁরা জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করার কথা বলেছিলেন, তাঁরাই জাতিকে নতুন করে বিভক্ত করার পথে হাঁটছেন।
একপক্ষ উন্নয়নের কথা বলে ক্ষমতার স্থায়িত্ব চায়, অপরপক্ষ তথাকথিত গণতন্ত্র রক্ষার নামে আগুনে ঘি ঢালে। অথচ কেউই জনগণের কথা বলে না। কেউই নিম্নবিত্তের দুঃখ, কৃষকের ঘামের মূল্য, বেকারের বেদনা বা চিকিৎসাহীন রোগীর দীর্ঘশ্বাস শোনে না।
এই উপদেষ্টাদের মধ্যে আজ নেই কোন সুসমন্বয়, নেই দীর্ঘমেয়াদি কৌশল, নেই সুনির্দিষ্ট জাতীয় নীতি। আছে কেবল আনুগত্য, স্বার্থ আর ক্ষমতার হিসাব-নিকাশ। এরা যেন উপদেষ্টা নয়—ক্ষমতার পার্শ্বচরিত্র। এমনকি জাতীয় সংকটেও তারা কেবল বিবৃতি দেন, কিন্তু সমাধান দেন না।
এটাই কি ছিল জনগণের স্বপ্ন?
এটাই কি ছিল স্বাধীনতার মূল চেতনা?
আজ আমরা দেখছি—উপদেষ্টা পরিষদের নিরপেক্ষতা কথার ফুলঝুরি মাত্র। বাস্তবে এটি এক বিভক্ত, মেরুকৃত, সুবিধাভোগী গোষ্ঠীর সমষ্টি। জনগণের স্বপ্নের মৃত্যু ঘটেছে এই উপদেষ্টাদের মঞ্চে।
তবুও স্বপ্ন দেখি—একদিন এই দেশ ফিরে পাবে সত্যিকারের নিরপেক্ষ, সাহসী ও মানবিক নেতৃত্ব। যারা কারো ছায়ায় নয়, দাঁড়াবে জনগণের পাশে।
তাদের হাতে তৈরি হবে সেই কাঠামো—যেখানে উপদেষ্টা নয়, জনগণ হবে আসল মালিক।
আল আমিন মিলু
আহ্বায়ক
গনঅধিকার পরিষদ
সরিষাবাড়ি উপজেলা শাখা
জামালপুর