নিজস্ব প্রতিবেদক
কলাম | মতামত | জাতীয় উন্নয়ন
একটি রাষ্ট্রের মেরুদণ্ড হলো তার প্রশাসন। আর এই প্রশাসন যদি হয়ে ওঠে নিরপেক্ষ, সৎ এবং মানবিক, তবে সেটি শুধু ন্যায়বিচার নিশ্চিত করে না—সমাজ থেকে বৈষম্যও দূর করে দেয়।
বৈষম্য বলতে আমরা বুঝি—ধনী-গরিবের ব্যবধান, লিঙ্গভিত্তিক বিভাজন, ধর্মীয় বা জাতিগত পার্থক্য, এমনকি রাজনৈতিক পক্ষপাতও। সমাজে এসব বৈষম্য তখনই গভীর হয়, যখন প্রশাসনের সিদ্ধান্ত বা কার্যক্রমে পক্ষপাতিত্ব ঢুকে পড়ে।
একজন ভূমিহীন কৃষক যখন তার জমির ন্যায্য হিস্যা পায় না, একজন গরিব নারী যখন স্বাস্থ্যসেবায় অবহেলার শিকার হন, কিংবা একজন সংখ্যালঘু নাগরিক যখন নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন—সেখানে প্রশাসনের নিরপেক্ষতা না থাকাটাই মূল সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়।
কিন্তু প্রশাসন যদি থাকে সৎ, স্বচ্ছ এবং আইনপ্রয়োগে নিরপেক্ষ, তাহলে কারো সঙ্গে অন্যায় হওয়ার সুযোগ থাকে না। সে গরিব হোক বা ধনী, সংখ্যালঘু হোক বা সংখ্যাগরিষ্ঠ—সবাই পায় সমান অধিকার, সমান সম্মান।
নিরপেক্ষ প্রশাসন শুধু বিচার করে না, এটি সমাজে আস্থা গড়ে তোলে। মানুষ রাষ্ট্রব্যবস্থার ওপর বিশ্বাস স্থাপন করতে শেখে। ফলে সামাজিক অস্থিরতা কমে, উন্নয়নের পথ সুগম হয়।
বর্তমান বিশ্বে অনেক রাষ্ট্রই টিকে আছে শুধু প্রশাসনিক দক্ষতা ও নিরপেক্ষতার কারণে। সিঙ্গাপুর, সুইডেন, কানাডার মতো দেশগুলোতে জনগণের মধ্যে সাম্য ও ন্যায়ের চর্চা প্রশাসনিক নিরপেক্ষতা দিয়েই নিশ্চিত হয়েছে।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটেও এই বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে আমাদের বড় চ্যালেঞ্জ হলো—সমাজের সব স্তরে ন্যায় প্রতিষ্ঠা করা। সে জন্য প্রশাসনের প্রতিটি স্তরে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত, মানবিক এবং জবাবদিহিমূলক একটি ব্যবস্থাপনা দরকার।
তাই বলাই যায়,
প্রশাসনের নিরপেক্ষতা কোনো বিলাসিতা নয়—এটি একটি জাতির জন্য অপরিহার্য। এটি শুধু আইনের শাসন নয়, এটি সামাজিক ন্যায়ের সোপান। আর সেই পথেই গড়ে উঠবে একটি বৈষম্যহীন, উন্নত, সম্মানজনক রাষ্ট্র।
আল আমিন মিলু
আহ্বায়ক
গনঅধিকার পরিষদ
সরিষাবাড়ি উপজেলা শাখা
জামালপুর