নিজস্ব প্রতিবেদক
সরিষাবাড়ীতে পরিবারের সাথে অভিমান করে চিরকুট লিখে ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যা করেছে আপন নামে এক এসএসসি পরিক্ষার্থী। বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে উপজেলার পোগলদিঘা ইউনিয়নের বয়ড়া সরকার বাড়ীতে এ ঘটনা ঘটে। নিহত আপন মিয়া বয়ড়া এলাকার সরকার বাড়ী শিপন মিয়ার ছেলে । আপন মিয়া বয়ড়া ইসরাইল আহমেদ উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী। মৃত্যুর আগে সে দুই পৃষ্ঠার একটি চিরকুট লিখে গেছে।
চিরকুটে আপন লিখেছে, আমি আপনাদের অনেক কষ্ট দিয়েছি, আমি আপনাদের অনেক ক্ষতি করেছি, আপনাদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেছি। আমি ছোট থেকেই অনেক খারাপ, নিজেকে কখনও ভালো করতে পারি নাই। বাবার কথা রাখতে পারি নাই, বাবার মনে অনেক কষ্ট দিয়েছি। বাবা আপনার পা দুটি ধরে মাফ চাইতে পারলাম না। আপনি আমাকে মাফ করে দিয়েন। আর মা তুমি আমার জন্য অনেক কষ্ট করছো, আমাকে অনেক বুঝাতে কিন্তু ভালো হতে পারলাম না। আর দাদার কথা কি বলব, সে তো আমার জন্য নিজের সম্মানটুকুও হারিয়েছে। আমার জন্য অনেক কিছু করেছে। কিন্তু আমি কেন ভালো হতে পারলাম না। আচ্ছা আমি সবার মনে কষ্ট দিয়েছি আপনারা আমাকে মাফ করে দিয়েন। বন্ধু তোদের সঙ্গে কত আড্ডা দিতাম, কত মজা করতাম, তোরা আমার কথায় কিছু মনে করিস না। আমার কবরে মাটি দিতে আসিস। আমার কাছে কেউ টাকা পেয়ে থাকলে আমাকে মাফ করে দিয়েন। আমি ভালো হতে পারলাম না। তাই নিজেই দুনিয়া থেকে চলে গেলাম। আপনারা ভালো থাকেন। আপনাদের খারাপ সন্তান আর নেই। বন্ধু তোরা কিন্তু আসিস আমার জানাজায়। ইতি- আপনাদের খারাপ ছেলে আপন।
আত্মহননকারী আপনের দাদা বীর মুক্তিযোদ্ধা শামসুল হক বলেন, আমার ছেলে ইটভাটায় কাজ করে। আর আপনের মা বাড়ীর পাশে কাজ করে। বৃহস্পতিবার আপন রাতে খেয়ে ঘরের দরজা বন্ধ করে ঘুমাতে যায়। পরে আপনের মা বাড়িতে এসে আপনকে ডাকাডাকি করতে থাকে। কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকলে ফাঁসিতে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। আপনের কাছেই ওই চিঠিটি ছিল।
এ বিষয়ে সরিষাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাশেদ হাসান বলেন, আত্মহত্যার সংবাদ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে সুরতহাল করা হয়েছে। এ বিষয়ে পরিবারের কোন অভিযোগ না থাকায় ও পরিবারের আবেদনের কারনে তার লাশ ময়নাতদন্ত ছাড়া দাফনের অনুমতি দেয়া হয়েছে।