কামরুল হাসান:
‘যতন করলে রতন মিলে’ এটি একটি নীতি কথা। আবার এটিকে প্রবাদও বলা হয়। বিশেষ করে বাংলা ২য় পত্রের ভাবসম্প্রসারনে অনেকেই এটির যতœ নিয়েছেন বৈ কি! সাথে ইচ্ছা থাকিলে উপায় হয় এটিরও। আবার কবি গুরু রবীন্দ্র নাথ ঠাকুরের কবিতার ভাষায়- যেখানে দেখিবে ছাই, ওড়াইয়া দেখ তাই-পাইলেও পাইতে পার, মানিক ও রতন।আরেক কবিতায়- দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়া/একটি ধানের শীষের উপর একটি শিশির বিন্দু। রূপসী বাংলার কবি জীবনানন্দ দাশের মা কুসুম কুমারী দাশের আমাদের ছেলে কবিতায় আমাদের দেশে হবে সেই ছেলে কবে/কথায় না বড় হয়ে কাজে বড় হবে। হুতুম পেঁচা খ্যাত কবি কালী প্রসন্ন ঘোষের ‘পারিব না’ কবিতায়- একবার না পরিলে দেখ দেখ শতবার/— কর যতন আবার।
৩মে শনিবার ছিল দক্ষিন জামালপুরের স্বনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সানশাইন ল্যাবরেটরি স্কুলের বার্ষিক ক্রীড়া পুরস্কার বিতরণী, ১ম সেমিষ্টার পরীক্ষার ফলাফল,বিতর্ক প্রতিযোগিতা ও কৃতি শিক্ষার্থী সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের দিন। সরেজমিনে দেখা যায়, অনুষ্ঠানের সূচনা লগ্নেই হাফেজ সাব্বির আহম্মেদ পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করেন। অতঃপর অধ্যক্ষ সিরাজুল ইসলামের স্বাগত বক্তব্যের মধ্য দিয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা শুরু হয়। প্রারম্ভিক আলোচনা করেন অত্র অনুষ্ঠান ও প্রতিষ্ঠানের সভাপতি প্রফেসর হাফিজুর রহমান, এরপর বক্তব্য দেন প্রধান অতিথি মাসুমা আরমিন মিতু, বিশেষ অতিথি জিয়াউল হক মাস্টার, ফিরোজ আহম্মেদ ফরিদ, জামাল মন্ডল ও প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক এডভোকেট মোজাম্মেল হক ও উপদেষ্টা জহুরুল ইসলাম প্রমুখ। এরপর শুরু হয় বিতর্ক প্রতিযোগিতার ১ম পর্ব ঃ (ইংলিশ) ‘স্মার্ট ফোনস মেক আস স্টুপিড’। এ পর্বের বিষয়ের পক্ষে অবস্থান নেয় ৯ম শ্রেণির শিক্ষার্থী মোহনা ও তার দল। আর ১০ম শ্রেণির শান্তনা সরকার ও তার দল অবস্থান নেয় বিপক্ষে। এ পর্বের ফলাফলে বিপক্ষ দলের জয় হয়। সেরা তার্কিক হয় বিপক্ষ দলের মাহিরা জান্নাত মাফি। আমি ছাত্র হিসেবে তেমন ভালো ছিলাম না। ছোট বেলায় মনে শিক্ষক হবার বাসনা জেগে উঠে। এক সময় হয়েও ছিলাম। কিন্তু শিক্ষকতার মতো মহান এ পেশার উপযুক্ত পাত্র হতে না পেরে শেয়ে কেটে পরি। তবে আজ বড় অবাক হয়ে গেলাম! মফস্বলের এ প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীরা যে এতো ভালো শিক্ষা অর্জন ও প্রশিক্ষন নিয়েছে তা বোধের বাইরে ছিল। এ অনুষ্ঠানে না আসলে বাস্তবিক ধারনা থেখে অনেক পিছিয়ে থাকতাম আর কি। তার্কিকদের উপস্থাপন, বাক্য গঠন, বাক পটুতাসহ বিভিন্ন বিষয়েই মুগ্ধ সবাই। এত শুধু তার্কিকরাই ধন্যবাদ পাবে তা নয়। সাথে যারা তাদের সঠিক নির্দেশনা না তৈরি করেছেন তারাও। আর তাদের অভিভাবকরাও। মনে হচ্ছিল যেন কোন জেলা ংিবা বিভাগীয় শহরের নামি দামি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের অংশ গ্রহনে এ বিতর্ক প্রতিযোগিতা চলছে। ২য় পর্ব ঃ (বাংলা) ‘নৈতিক শিক্ষার প্রসারই পারে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মান করতে’। এ পর্বের বিষয়ের পক্ষে অবস্থান নেয় ১০ম শ্রেণির শিক্ষার্থী মারিয়া জান্নাত লিভা ও তার দল। আর একই শ্রেণির কামরুল ইসলাম রিয়াদ ও তার দল অবস্থান নেয় বিপক্ষে। এ পর্বের ফলাফলে পক্ষ দলের জয় হয়। সেরা তার্কিক হয় পক্ষ দলের মারিয়া জান্নাত লিভা। পরে১ম সেমিষ্টার পরীক্ষার ফলাফল ঘোষনা করা হয়। সবশেষে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতাসহ অন্যান্য প্রতিযোগিতার জিয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেয়া হয়। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন পরিচালক প্রফেসর মামুনুর রশিদ। (লেখক: মানবাধিকার কর্মী, সাংবাদিক, ফিচার ও কলাম লেখক) কামরুল হাসান,০১৯১৪-৭৩৫৮৪২***